বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
নারী অপহরণসহ নানা অপকর্মের অভিযুক্ত পুলিশের আলোচিত ডিআইজি মিজানুর রহমান তার ব্যক্তিগত পিস্তলের গুলি কেনার অনুমতি চেয়ে মাগুরায়  আবেদন করেছেন। অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে বিয়ে করাসহ নানা অপকর্মের জন্য অভিযুক্ত হয়ে তিনি এখন পুলিশ হেড কোয়ার্টারে ক্লোজড আছেন। তার বিরুদ্ধে ওই সকল ঘটনার তদন্ত চলছে। আজ সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসক বরাবর তিনি এ আবেদন জানান। আবেদনপত্রে তিনি উল্লেখ করেন- ১৯৯৮ সালে মাগুরায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত অবস্থায় তিনি একটি এনপিবি পিস্তল লাইসেন্স -নং ০৬/মাগুরা/১৯৯৮ প্রাপ্ত হন। গত ২৩/০৫/২০১১ তারিখে পিস্তল নং- DAA498318 Beretta. Made in U.S.A মডেলের একটি পিস্তল কেনেন। ওই পিস্তলের জন্য তিনি বিধি মোতাবেক ৪০ রাউন্ড গুলি কেনার অনুমতি প্রদানের আবেদন করেন। মাগুরা জেলা প্রশাসনের একটি বিশ্বস্ত সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা প্রশ্নের দেখা দিয়েছে।  অস্ত্রের মুখে বিভিন্ন অপকর্মের তদন্তাধিন অভিযোগ থাকার পরও তিনি অস্ত্রের লাইসেন্স ও গুলি কিনতে পারবেন কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মাগুরার জেলা প্রশাসক মো: আতিকুর রহমান ডিআইজি মিজানুর রহমানের আবেদনের বিষয়টি স্বীকার করে এ বিষয়ে কোন প্রকার মন্তব্য করতে রাজী হননি।

জানা গেছে –  এ বছর জানুয়ারী মাসে মরিয়ম আক্তার ইকো নামে এক তরুণী সংবাদমাধ্যমের কাছে তাকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করাসহ পুরো ঘটনার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন ।

ইকো জানান, জোরপূর্বক তাকে বিয়ে করে লালমাটিয়ায় ৫০ হাজার টাকার ভাড়া ফ্ল্যাটে নিয়ে গোপনে সংসার শুরু করেন ডিআইজি মিজান। ওই ফ্ল্যাটের নিচে সাদা পোশাকে সার্বক্ষণিক পুলিশের দু’জন সদস্যকে পাহারায় রাখা হয়। এর ফলে ইকো এক রকম গৃহবন্দি হয়ে পড়েন।   অনেকটা জেলখানার মতো।  কথায় কথায় তাকে মারধর করতেন ডিআইজি মিজান।

এভাবেই কেটে যায় ৪ মাস। একদিন তিনি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজানকে স্বামী হিসেবে পরিচয় দিয়ে অফিসে মুডে থাকা একটি ছবি ফেসবুকে আফলোড করেন। এতেই চরমভাবে ক্ষিপ্ত হন মিজানুর রহমান। এ ছবির বিষয়টি পুলিশের উপর মহলে জানাজানি হয়ে যায়। ফেসবুক থেকে দ্রুত ছবিটি সরিয়ে ফেলতে তিনি লালমাটিয়ার বাসায় ছুটে আসেন। সেখানে বিষয়টি নিয়ে স্ত্রী ইকো, শাশুড়ি কুইন তালুকদারের সঙ্গে তার চরম মাত্রায় বাকবিতণ্ডা হয়।

এদিকে সেপ্টেম্বরের এ ঘটনার পর তাদের সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। ইকো সমাজিকভাবে ডিআইজি মিজানের স্ত্রী পরিচয়ের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অটল থাকেন। এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় গোপন রেখে বাসা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলা করা হয়। এ মামলায় ইকোকে ১২ ডিসেম্বর পুলিশ গ্রেফতার করে। ১৩ ডিসেম্বর আদালতে হাজির করার পর তার জামিন আবেদন নাকচ হওয়ায় তাকে কারাগারে যেতে হয়। পরে তার বিরুদ্ধে ভুয়া কাবিন করার অভিযোগ এনে আরও একটি মামলা করা হয়।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, এর আগে ডিআইজি মিজানুর রহমান ফিল্মিস্টাইলে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের জনৈক সংবাদ পাঠিকাকে পিস্তলের মুখে জোর করে গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় জনতার হতে ধরা পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে। সম্প্রতি রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

 মাগুরা/ ২৮ মে ১৮