সোহানুজ্জামান খান নয়ন, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
তুমি আমার সাত সকালের প্রথম প্রহরের “রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বিরআনি সগীরা” তোমার কোমলমতি কোলে যখন ছিলাম তঁখন শুধু বকতে আমি না কি খাইতে চাইতাম না। এখন মাশআল্লাহ তোমার ছেলে ভালই খাই। ভাল-মন্দ যা পাই তাই। তারপর একটু বড় হলে আমি না কি শুধু খাট থেকে পড়ে যেতাম। তঁখন তোমার কলিজা ফেটে যেত।

d88795bcd98af0784cd89b54a9f84d96-572e408479d0f বিশ্বাস কর, আমি এখন আর হোচটও খাই না! তুমি আমার স্কুল শিক্ষিকা মা। আর আমি পাঠ্যবই বিমুখ এক ছাত্র। এবার স্কুল জীবন। তোমার আমার টম এন্ড জেরী খেলা। মা’ বলতে পারবে, কে এই খেলায় জিতেছে? আব্বু বলতেন, ক্লাসের ফাস্ট নয় বেস্ট বয় হতে আর তুমি তো দুটোই চেয়েছিলে। আমি সোজাসাপটা বলি দুজনকেই জলাঞ্জলী দিয়েছি। এত বড় নিয়ম আমাকে বাঁধতে পারেনি। তবে মা যান আমি স্কুল পালাতে খুব দক্ষ ছিলাম, এই বাউন্ডুলে ছেলের জন্য ঠিক যেমনটি দক্ষ ছিলে তুমি আঁচল তলে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে!! সরি মা, আলোচনা গভীরে চলে যাচ্ছে। এরপর আরও বড় হলাম। রাজনীতির একটা শঙ্কা তবে খান বাড়ীর ছেলের সে সুযোগ ছিল না। খেলার মাঠ আর টেবিল টেনিস জীবন শুরু হল। খুব ছোট বেলাতেই ঢাকার লিগে খেলতাম যা তুমি একদম মানতে পারনি তবে আমাকে আটকাতেও পারনি। এর পর স্থায়ী ভাবে ঢাকা এসে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তুমি আমার সাথে জীবনে আর পার নাই। যতদিন তুমি আমার কাছে জানতে চেয়েছ খেয়েছি কি না! কি খেয়েছি, আমি ততদিন বলেছি, খাসির রেজালা, মুরগীর রোস্ট, পোলাও, সরিষা ইঁলিশ, চিংড়ির মালাইকারি। তঁখন হয়তো তোমার মুখখানা দেখতে পেতাম না, তুমি যে হেরে যেতে তা ভালই বুঝতাম মা। এখন তোমার নতুন আবদার। তোর কি কোন পছন্দ নেই রে! ঢাকায় না কত সুন্দর সুন্দর মেয়েরা থাকে। ফোনে-টোনে কঁথাও তো বলতে পারিস। আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে তো পারিস। আজকাল তো নিজেদেরই তো পছন্দ থাকে। বয়স বাড়ছে তো, বউ মা আনব। তোর কোন চিন্তা করতে হবে না। আমি হাসি, ‘শুধু হাসিই না হেসে হেসে মরি…. যে মা’কে বাঘের থেকে একটু কম ভয় পাইতাম সে কি না বলে পছন্দ টছন্দ…. আসল কি মা যান, “আমি প্রথম দর্শনে ভালবাসায় বিশ্বাসী, কারণ আমি জন্মে যে তোমাকেই দেখেছি” আসলে এই সব ভুলভাল বলে টলে মা’কে টম এন্ড জেরি খেলা খেলে চলেছি বেশ কিছুদিন হল। Maa Dibosh b

যাইহোক এবার একটু আবেগী হওয়া যাক। তুমি আমার মায়াবতী মমতাময়ী মা। পথ ভুল করা ছেলে হলেও প্রতি ভোরে ঠিকই তোমার আদর্শলিপি গুগোল করে পথ ফেরা ছেলে। ভাবতে গেলে কবির ভাষায় বলতে হয়, ” সে আজ হল কত কাল, তবু যেন মনে হয় সকাল হল গতকাল” সত্যি আমি বড় হয়েছি তবে তোমার কাছে না। তুমি আমার মায়াবতী গন্ধ, রঙে রাঙ্গানো আলোক সজ্জা সন্ধ্যে নামা। আমাকে শতবার ভালবাস বলেই না মনের অজান্তে অযথাই, খামখা কেঁদে ফেলার কারণ। “মা তুমি আমার মায়াবতী মা” মা’ একটু সময় করে আঁচলে চোখ লুকিয়ে ভালবাসা নিও। “মা’ দিবসের শুভেচ্ছা”।

আজ বিশ্ব মা দিবস: প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার সারাবিশ্বে মা দিবস পালন করা হয়।

লেখক: সোহানুজ্জামান খান নয়ন, সাংবাদিক এবং ক্রীড়া সংগঠক