স্টাফ রিপোর্টার, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
বড়লোক শ্যালক, শ্যালকের স্ত্রীসহ শ^শুর বাড়ির লোকজনকে প্রাধান্য দিয়ে সাজানো তালিকায় কমপক্ষে ৫০ ভাগ ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে ১০ টাকার চাল বিতরণের অনিয়ম নিয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে মাগুরা সদর উপজেলার ৩ নং কুছুন্দী ইউনিয়নের ভুক্তভোগিরা। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য থেকে শুরু করে সরকার দলীয় নেতারা পর্যন্ত বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

কুছুন্দী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল মান্নান, রবীন্দ্রনাথ বিশ^াসসহ অনেকেই অভিযোগ করেন- ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল কাশেম মোল্যা সম্পূর্ণ একক কর্তৃত্বে হতদরিদ্রদের জন্যে ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিতরণের যে তালিকা করেছেন তার মধ্যে ৫০ শতাংশই ধনী ব্যক্তি ও ভুয়া নাম ঠিকানা অর্ন্তভুক্ত। চেয়ারম্যানের একক কর্তৃত্বে করা ২৩৫ জনের তালিকার ৬৮,৬৯,৭৫,৭৬ ক্রমিক নম্বরে তার বড়লোক চাচাতো শ্যালক রিয়াজুল ইসলাম, তার স্ত্রী সাদিয়া পারভিন, অপর শ্যালক রানা, তার স্ত্রী পলি বেগম সহ কমপক্ষে ৬০ জন ধনী আত্মীয় স্বজনের নাম আছে।

তালিকা করার বিষয়ে মিঠুন মজুমদার,আব্দুল মান্নানসহ কুছুন্দি ইউনিয়নের ১৩ জন সদস্যের কেউই জানেন না বলে জানিয়েছেন। এটি চেয়ারম্যান এককভাবে করেছেন বলে তারা দাবী করেন।

এই তালিকায় ৪ নম্বর ওয়ার্ডে কৃষ্ণপুর গ্রামের ওই ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ ভাদুড়ী ছাড়া আর কারো নাম নেই। একই অবস্থা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের। সেখানে শৈলডুবি ও খর্দ কুছুন্দী গ্রামের কোন হতদরিদ্রের নাম নেই। বরং ইউনিয়নের বাইরে পৌরসভার অন্তরর্ভুক্ত লক্ষিকান্দর ও বারাশিয়া গ্রামের ১০ জনকে ওই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব ভুয়া তালিকা ভুক্ত নামধারিদের চাল চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল হিমন কালো বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে।

ইউনিয়নের নির্ধারিত ডিলার আব্দুর রহিম এ বিষয়ে বলেন, ‘আমার কাছে যে তালিকা দেয়া হয়েছে সে অনুযায়ী যথাযথভাবে চাল বিতরণ করছি। এ বিষয়ে আমার আর কিছু জানা নেই’।

অভিযোগের বিষয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল হিমন বলেন, ‘ তালিকা নিয়ে একটু সমস্যা ছিল। পরে সেটি সমাধান করে ফেলেছি’।

সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আনোয়ারুল করিম মাগুরাবার্তাকে  বলেন, ‘এ ধরনের কোন লিখিত অভিযোগ আমাদের হাতে আসেনি। এলে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেয়া হবে’।

প্রসঙ্গত, জেলায় মোট ৩৬ হাজার ৬শ’ ৪০ পরিবার ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল পাচ্ছেন। জেলায় ৬৭ জন ডিলারের মাধ্যমে এ চাল বিক্রি করা হচ্ছে।

 

রূপক আইচ, ১২ অক্টোরব ১৬