মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন: মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
মাগুরার কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয় হচ্ছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত বিরি-৬২ নামের জিংকসমৃদ্ধ ধানের আবাদ। ![magura-jink-rice-pic-01](http://magurabarta24.com/wp-content/uploads/2016/11/magura-jink-rice-pic-01.jpg)
চলতি আমন মৌসুমে জেলার চারটি উপজেলায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাম্পন্ন উচ্চফলনশীল বা উফশী জাতের এই ধানের আবাদ বাড়ছে বলে জানিয়েছে কৃষিবিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মোট ১ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে চলতি মৌসুমে বিরি-৬২ জাতের ধানের আবাদ হয়েছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীরা জাতটির উদ্ভাবন করেছেন।
দেশি ধানের সঙ্গে পরাগায়নের মাধ্যমে জাতটি উদ্ভাবনে সহায়তা করেছে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি), যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হারভেস্ট প্লাস ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)।
অন্যান্য ধানের জাতের মধ্যে সাধারণত প্রতি কেজিতে সর্বোচ্চ ১০ মিলিগ্রাম জিংক ফরটিফায়েড ও ৬ শতাংশ প্রোটিন থাকে। বিরি-৬২ ধানের প্রতি কেজিতে ১৯ মিলিগ্রাম জিংক ও ৯ শতাংশ প্রোটিন রয়েছে।
এই জাতের চাল খেলে মানুষের শরীরে আয়রন ও প্রোটিনের চাহিদা অনেকাংশে মিটবে বলে আশা করছেন ব্রির বিজ্ঞানীরা। এই ধানের চাল খেলে শরীরে রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতাও বাড়বে।
কৃষি বিভাগ আরও জানায়, মাগুরা সদরে ৩৭০হেক্টর, শ্রীপুরে ৪০ হেক্টর, শালিখায় ৩০০হেক্টর ও মহম্মদপুর উপজেলায় ৬১০হেক্টর জমিতে জিংকসমৃদ্ধ বিরি-৬২ জাতের ধানের আবাদ হয়েছে।
গত আমন মৌসুমে এই ধানের বীজ কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করে প্রচারাভিযান চালায় কৃষি বিভাগ। প্রদর্শণী প্লটে চাষ করেন কৃষক। ভালো ফলন পাওয়ায় চলতি মৌসুমে মাঠ পর্যায়ে আবাদ বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা।
আমন মৌসুমে জাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম সময়ে, ১০৫ দিনের মধ্যে এ ধান উৎপাদিত হয়। চাল হয় মাঝারি আকারের। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হয়েছে ৪ দশমিক ২ মেট্রিক টন।
ঘুল্লিয়া এলাকার কৃষক চুন্নু শেখ, রাজাপুরের মিলন সরকার, পলাশবাড়িয়ার মিনারুল মোল্যা, ও বালিদয়িার শাহেদ শেখের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। এসব কৃষক জানান,‘জিংকসমৃদ্ধ বিরি-৬২ জাতের ধানের আবাদ করে তারা খুশি। অল্প সময়ে ভালো ফলন পাওয়ায় তারা রবি শস্যের আবাদ করতে পারবেন। সামনের মৌসুমে াতার এ জাতের ধানের আবাদ আরও বাড়াবেন বলে জানান।’
মাগুরা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক পার্থ প্রতীম সাহা মাগুরাবার্তাকে বলেন,‘ জিংকসমৃদ্ধ বিরি-৬২ হাইব্রীড নয় এটি উচ্চ ফলনশীল। চাল খেলে মানুষের শরীরে আয়রন ও প্রেটিনের চাহিদা অনেকাংশে মিটবে । স্বল্পমেয়াদী ও ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে জাতটি জনপ্রিয় হচ্ছে।’
সম্পাদনা: রূপক আইচ/ ১৭ নভেম্বর ১৬