রূপক আইচ, মাগুরাবার্তা
মাগুরা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত জেলার ঐতিহ্যবাহি নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে খেলার মাঠটিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতায় মশা-মাছির অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে । পানি নিস্কাষনের ব্যবস্থা না থাকায় গত প্রায় ৮মাস ধরে বৃষ্টির পানি জমে পচা পানিতে দুর্গন্ধ দেখা দিয়েছে। মশা-মাছি ও কিট পতঙ্গ এমনকি জলজ সাপও এখানে অবাধে বিচরণ করে। এ কারণে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সরকারি নির্দেশে সারাদেশে স্কুল খোলার কথা থাকলেও এ স্কুলটিতে ক্লাসের পরিবেশ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন একাধিক অভিভাবক ও ছাত্রীরা। এদিকে স্কুল ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতায় স্কুল সংলগ্ন কলেজপাড়া, জেলা পাড়ার বাসিন্দারাও পড়েছেন চরম বিপাকে।
বিদ্যালয়টির ছাত্রীর অভিভাবক আব্দুস সবুর ও চম্পা দাস জানান- সরকারি নির্দেশে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল খোলার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে স্কুলের ক্লাসরুম ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত হলেও স্কুল ক্যাম্পাসে প্রায় ৬ মাস ধরে জমে থাকা পানি নিস্কাষনের কোন ব্যবস্থাই করা হয়নি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা পানিতে ইতিমধ্যে পচন ধরেছে। এটি এখন মশা মাছি ও বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে দেশে মশা বাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়া আমরা ছাত্রীদের স্বাস্থ্য নিয়ে উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছি। তারা দ্রুত এখানকার পানি নিস্কাষণ করে ওষুধ ছিটিয়ে এলাকাটি পরিশোধন করে ছাত্রীদের শিক্ষার উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিতের দাবী করেন। অন্যথায় ছাত্রীরা স্কুলে আসলেও মশার কামড় ও দুর্গন্ধে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে জানান।
এ স্কুলের নিঝুম, তুলি, অনিকাসহ একাধিক ছাত্রী জানায়- দীর্ঘদিন পর স্কুলে যেতে পারবো এটা খুবই আনন্দের বিষয়। কিন্তু মাঝে এসাইনমেন্ট জমা দিতে সেখানে গিয়ে দেখলাম স্কুল মাঠে পানি পচে খুবই খারাপ অবস্থা। স্কুলের খেলার মাঠে এখন কোমর সমান পানি। অনেক ছাত্রীই সাতার জানে না। তাদের জন্য এ পানি আরও বড় বিপদ নিয়ে আসতে পারে।
সরকারি বালিকা বিদ্যালয় সংলগ্ন জেলা পাড়ার বাসিন্দা অধ্যক্ষ (অব:) কাজী নজরুল ইসলাম ফিরোজ জানান- দীর্ঘদিন ধরে জলাবন্ধতার কারণে স্কুলের খেলার মাঠটি এখন জন উপদ্রবে পরিণত হয়েছে। এখানে মশা, মাছি, সাপ, ব্যাঙ এলাকার মানুষের পরিবেশ দুষিত করছে। কর্তৃপক্ষ দ্রুত এ অবস্থার উত্তোরণে ব্যবস্থা নেবে এটি আমাদের প্রত্যাশা।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক নির্মল চন্দ্র জোয়ারদার জানান- স্কুলের খেলার মাঠে পানি জমে যাওয়া এ স্কুলের একটি দীর্ঘ বছরের সমস্যা। আমি ইতিমধ্যে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ড. আশারাফুল আলম মহোদয়কে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাগুরার পৌর মেয়র খুরশিদ হায়দার টুটুল জানান- পৌরসভার ড্রেনের থেকে ওই মাঠটি নিচুু হওয়ায় মাঠের পানি পৌর ড্রেনে আনা সম্ভব হচ্ছে না। ইতিমধ্যে পৌরসভার পক্ষ থেকে দুটি পাম্পের মাধ্যমে পানি নিষ্কাষনের কাজ শুরু হয়েছে।

রূপক / মাগুরা /৮ সেপ্টেম্বর ২০২১