বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরায় নৌকায় বেঁধে জীবন্ত ডুবিয়ে হত্যা করা শিশু মাহিদের (৭) লাশ ঘটনার দুইদিন পর নবগঙ্গা নদী থেকে আজ রবিবার বিকেলে উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের ডুবরি দল ।  রবিবার বিকালে শিশু মাহিদের বাড়ির সামনে মাগুরার সদর উপজেলার বারাশিয়া গ্রামের নবগঙ্গা নদী থেকে মাহিদ এর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মাগুরা ফায়ার সার্ভিসের সাব স্টেশন অফিসার মো. সাখাওয়াত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পুলিশ জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মাহিদ নামে ৭ বছরের ওই শিশুটিকে নৌকায় বেঁধে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে প্রতিবেশী দুই কিশোর। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই কিশোরকে আটক করেছে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে আটক ওই কিশোর ও তার বাবা। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ি শনিবার ও রবিবার পুলিশ নবগঙ্গা নদীতে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালায়। শনিবার রাত পর্যন্ত শিশুটির কোনো কূলকিনারা না হওয়ায় রোববার সকাল পৌনে নয়টা থেকে নতুন করে সেখানে তল্লাশি চালানো শুরু হয়। ৫ সদস্যের ডুবুরি দল চেষ্টা চালিয়ে রবিবার দুপুর দুইটার দিকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করেন।
পুলিশ জানায়, গত ৭ অক্টোবর সকালে মাগুরার সদর উপজেলার বারাশিয়া গ্রামের মজিরুল মোল্যার শিশুপুত্র মাহিদ নিখোঁজ হয়। ওই দিনই শিশুটির বাবা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। কিন্তু পরদিন মোবাইল ফোনে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে ওই গ্রাম থেকেই অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া রোহান (১৪) নামে এক কিশোর এবং তার বাবা ইমরান আলি আসলামকে আটক করে।
পরে কিশোর রোহান পুলিশের কাছে স্বীকার করে, হনুমান দেখতে যাওয়ার কথা বলে মাহিদকে বাড়ির সামনে থেকে নিয়ে যায়। কিন্তু তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির পাশে নবগঙ্গা নদীর ঘাটে। সেখানে আগে থেকে ভিড়িয়ে রাখা একটি তালের ডোঙ্গা নৌকায় বেঁধে জীবন্ত অবস্থায় শিশুটিকে পানিতে ডুবিয়ে দেয়া হয়।
পুলিশের হাতে আটক রোহান নিখোঁজ শিশুটির প্রতিবেশী। কিছুদিন আগে রোহানের বাবাকে শিশু নাহিদের বাবা অপমান করায় তার প্রতিশোধ নিয়ে সে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে। তবে তাদের মধ্যে পুরনো কোনো শত্রুতা নেই বলে জানিয়েছেন নিখোঁজ নাহিদের চাচা নিরো মোল্যা।
মাগুরা সদর থানার অফিসার ইনচার্নাজ (ওসি) জয়নুল আবেদীন জানান, আটক রোহানের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে দুইদিন তল্লাশি চালানোর পর আজ দুপুরে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

রূপক/মাগুরা /১০ অক্টোবর ২০২০