বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরা সদর উপজেলার সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও) ব্রজেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের প্রচেষ্টায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার নতুন রাস্তা তৈরী হলো। শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব শিক্ষার মানোন্নয়ন হলেও তিনি সদর উপজেলার আমুড়িয়া ক্লাস্টারে কুচিয়ামোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির রাস্তার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এনে তাদের মাধ্যমে এটি সম্পন্ন করান।
মাগুরা সদরের সহকারী শিক্ষা অফিসার ব্রজেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান-  তিনি মাগুরায় বদলী হয়ে আসারপর সদরের  আমুড়িয়া ক্লাস্টারের অর্থাৎ কুচিয়ামোড়া ইউনিয়ন এর স্কুল গুলো দেখাশোনার দায়িত্ব পান। একদিন কুচিয়ামোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিদর্শন করতে গিয়ে তিনি পাকা রাস্তায় মোটরসাইকেল রাখেন। দেখতে পান পাকা রাস্তা থেকে স্কুলে যাওয়ার জন্য দুপাশে পুকুরের মধ্য দিয়ে চিকন  একটি পায়েচলা আইলপথই ভরসা। স্বাভাবিক দৃষ্টিতেই বোঝা যায় এটি দিয়ে স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও স্থানীয়দের স্কুলে যেতে খুবই অসুবিধা হয়।  আর  বর্ষার দিন হলেতো ভোগান্তির অন্তই নেই। এ সময় তিনি স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষক আইয়ূব হোসেন এর মাধ্যমে জানতে পারেন বিভিন্ন সময়ে  চেষ্টা করা হলেও রাস্তাটি করা সম্ভব হয়নি। পাশাপাশি হাইস্কুল ও প্রাইমারি স্কুল থাকার পরও কেউই রাস্তাটি নিয়ে তেমন মাথা ঘামায় নি ।  বিষয়টি জানা পর শিক্ষা কর্মকর্তা ব্রজেন্দ্রনাথ মাগুরা সদর উপজেলার পরিষদের একটি সভায়  এখানে রাস্তা করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উত্থাপন করেন। ওই সভায়  উপস্থিত সবাই রাস্তা করার ব্যাপারে সমর্থন দেন। এরপর তিনি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার  আবু সুফিয়ান এর সাথে এই জায়গাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেখা মাত্র ওই স্থানে রাস্তাটি করার জন্য উদ্যোগ নেন এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার কে সহযোগিতা করতে বলেন। পরবর্তীতে উপজেলা পরিষদের সহায়তায় ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: জাহাঙ্গীর হোসেন এবং ইউপি সদস্য কন্দর্প মন্ডল এর  প্রচেষ্টায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১শ ৪৫ ফুট লম্বা আইলপথের দুপাশে পুকুরের মধ্যে ২শতাধিক বাঁশ দিয়ে বেধে ২০ ট্রাক মাটি ও বালু ফেলে রাস্তাটি তৈরী করা হয়। ৪০ জন শ্রমিক ৩০ দিন ধরে কাজ করে রাস্তাটি সম্পন্ন করে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক আয়ুব হোসেন জানান – একটি স্কুলের লেখাপড়ার মানোন্নয়নে অবকাঠামো যে কত গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা বুঝতে পেরেছি এটিইও ব্রজেন স্যারের উদ্যোগে।  আমাদের স্কুলের রাস্তাটি  না হওয়া পর্যন্ত তিনি নিয়মিত খোঁজ খবর রেখেছেন ও বিষয়টির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে লেগে থেকেছেন। এখন স্কুলটিতে সারাবছর মোটরসাইকেল সহ তিন চাকার গাড়িও অনায়াসে চলতে পারে। এতে স্কুলের লেখাপড়ার মানও বেড়ে গেছে।  এজন্য আমরা ইউএনও মহোদয়, চেয়ারম্যান মহোদয়, ব্রজেন স্যারসহ সংশ্লিষ্ঠ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।

এটিইও ব্রজেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন – শিক্ষার গুনগত মানের সাথে অবকাঠামো বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামে অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় স্কুল ভবন সুন্দর কিন্তু রাস্তার বেহাল দশার কারণে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসতে চায় না। এজন্য আমরা যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে সব দিকে খেয়াল রাখি তাহলেই প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব। আমুড়িয়ার এ স্কুলটির রাস্তা সম্পন্ন করে দেয়ার পেছনে যারা সহায়তা করেছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

মাগুরা/২৩ আগস্ট ২০২০