বিশেষ  প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরায় লক্ষ্যমাত্রার  অর্ধেক চামড়াও সংগৃহিত হয়নি জেলার চামড়া ব্যবসায়ীদের গুদামে ।
জেলা পশু সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়,জেলায় এবার কোরবানি দেওয়া হয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার পশু । অথচ চামড়া ব্যবসায়ীদের সংগৃহিত চামড়ার পরিমান ১৫ হাজারেরও নিচে । চামড়ার নায্য মূল্য না পেয়ে এবং  আড়তদাররা চামড়া কিনতে অস্বীকৃতি জানানোয় অনেক বিক্রেতায় চামড়া ফেলে দিয়েছে ভাগাড়ে ।
এ অবস্থায় পুজিঁ হারাতে বসেছে  জেলার মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা । অন্যদিকে,মসজিদ,মাদ্রাসা,এতিমখানা কতৃপক্ষ ও হতদরিদ্রদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম হতাশা । কেননা কোরবানির চামড়ার অর্থ মুলত বিলি করা হয় তাদের জন্য ।
মাগুরা শহরের ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা হামিদুর রহমান জানান,তিনি তার কোরবানি দেওয়া একটি ছাগলের চামড়া নিয়ে স্থানীয় একটি আড়তে গেলে আড়তদার তাকে চামড়াটির মূল্য ৩০ টাকা দিতে রাজি হন । অথচ চামড়া বিক্রি জন্য তাকে রিকসা ভাড়া দিতে হয়েছে ৩০ টাকা । তাই মনের দু:খে তিনি চামড়াটি বিক্রি না করে ভাগাড়ে ফেলে দিয়েছেন ।
শহরেরে নান্দুয়ালী এলাকার মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক জানান, স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ২০ হাজার টাকার ঋন নিয়ে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি থেকে চামড়া সংগ্রহ করি । কিন্তু সংগৃহিত চামড়া বিক্রি করে পেয়েছি মাত্র ৬ হাজার টাকা । লাভ তো দূরের কথা ঋণের টাকা কিভাবে  শোধ করব তা নিয়ে চিন্তিত ।
মাগুরা নতুন বাজার এলাকার আড়তদার আব্দুল ওয়াব জানান,গত বছর আমার সংগৃহিত চামড়া ছিল প্রায় ৮ হাজার পিচ । যা কিনা এ বছর ৩ হাজারেরও নিচে । তিনি অকপটে  স্বীকার করেন একটি ছাগলের চামড়ার সর্ব্বোচ মূল্য দিতে পেরেছি মাত্র ৫০ টাকা । কেননা ট্যানারী মালিকের কাছে আমার পাওয়া টাকার পরিমান ৩০ লক্ষ টাকা । বার বার তাগাদা দিয়েও তাদের কাছ  থেকে ঈদের আগে পায়নি । অন্যদিকে,ব্যাংক কতৃপক্ষের কাছে বার বার ধর্না দিয়েও কোন ঋণ পায়নি ।
মাগুরা জেলা চামড়া ব্যবসা সমিতির সভাপতি আবু শরিফ জানান, ট্যানারী মালিকদের কাছে মাগুরার চামড়া ব্যবসায়ীদের পাওনা প্রায় ৪ কোটি টাকা । তারা ঈদের আগে ব্যবসায়ী বকেয়া টাকা না দেওয়ায় তারা চামড়া কিনতে ব্যর্থ হয়েছে । মাঠ পর্যায়ে চামড়া সংগ্রহ করি আমরা আড়তদাররা । আর ট্যানারী মালিকরা আমাদের সরবরাহকৃত চামড়া ক্রয় করে। অথচ ট্যানারী মালিকরা স্বল্প সুদে  ব্যাংক লোন  পেলেও আমরা এ ক্ষেত্রে বঞ্চিত । আবার সরকার কাঁচা রপ্তানির যে অনুমোদন দিয়েছে তা শেষ মুহুর্তে এসে । এই সিদ্ধান্ত  আগে দেওয়া হলে চামড়া ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হত না ।

মাগুরা/ ২০ আগস্ট ১৯