বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ৪ নং শ্রীপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য উপ-নির্বাচনে তালা প্রতিকের জয়ন্ত বিশ্বাস ১ হাজার ৩৭ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি দীর্ঘদিনের মেম্বর মোরগ মার্কা প্রতীকে শেখ আব্দুল মতিন পেয়েছেন ৬ শত ৬২ ভোট।  মাগুরায় এই প্রথমবারের মত ইভিএম-এ ভোট গ্রহন করা হলো।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোট গ্রহন চলে। ভোট গ্রহন শুরুর পূর্বে সকাল আটটার দিকে মতিন শেখের সমর্থকেরা জয়ন্ত বিশ্বাসের এজেন্ট বাহারুল ও নুরুল খাঁকে বেধড়ক মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। তবে পুলিশ প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে পরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহন ও ফলাফল প্রকাশ সমাপ্ত হয়।
উল্লেখ্য, তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য শেখ আব্দুল মতিন ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে পদটি শূন্য হয়।
দীর্ঘদিন ধরে মতিন শেখ ইউপি সদস্য থাকলেও কেন তার এই শোচনীয় পরাজয়- নির্বাচনের পর-পরই তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় এলাকাবাসী যে তথ্য দিয়েছেন তা রীতিমতো ভয়ংঙ্কর। ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় অধ্যুষ্যিত এই এলাকায় এক কথায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল শেখ আব্দুল মতিন। মতিনের ভয়ে এখানে কেউ মুখ খুলতে পারতো না। তবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হেরে গিয়ে আর্থিকৎভাবে দূর্বল হলে দাপট একটু হলেও কমতে থাকে তার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একাধিক ভোটার জানান, কারো বাড়িতে ছোট খাটো কোন অনুষ্ঠান করতে গেলেও মতিনের অনুমতি নেওয়া লাগতো। অনেক কাজেই তাকে চাঁদা না দিলে নির্যাতনের শিকার হতে হতো। এসব কাজে হিন্দুদের মধ্যে তাকে সহযোগিতা করতো এলাকার মিলন বিশ্বাস ও সুপন্দ্রে নাথ রায়। মিলন বিশ্বাস তার অনেক অপকর্মের ডান হাত বলে পরিচিত। তবে দীর্ঘদিনের এসব অত্যাচারের কারণে প্রতিবাদ করে সাহসী ভূমিকা নেয় জয়ন্ত বিশ্বাস। গতকালের নির্বাচনে দীর্ঘদিনের এসব অত্যাচার ও নির্যাতনের জবাব দিয়েছে এলাকাবাসী-এমনই প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভোটার।
বেসরকারি ভাবে বিজয়ী জয়ন্ত বিশ্বাস বলেন, নির্বাচনে আমার প্রার্থি হওয়ার কারণে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়েছে, এলাকায় প্রথমদিকে আমার কোন পোষ্টার টানাতে দেওয়া হয়নি, পরে যা টানিয়েছি তাও মতিনের লোকজন খুলে নিয়ে গেছে। আমার সমর্থকদের মারধর করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এসব বিষয় আমি লিখিতভাবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেছি। নির্বাচনের দিন সকালে আমার দুইজন এজেন্টকে মারধর করে রক্তাক্ত করা হয়েছে। তবে পুলিশ প্রশাসনের শক্ত অবস্থানের কারণে এলাকাবাসী সাহস করে ভোট দিতে আসতে পেরেছে। নির্বচনে জয়ী হওয়ায় তিনি এলাকাবাসী ও প্রশাসনকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
মাগুরা/ শ্রীপুর/ ২৫ জুলাই ১৯