বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে অসহায় দুঃস্থদের জন্য দেয়া দুম্বার মাংস সরকারি দলের নেতাসহ রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের মধ্যে বন্টনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই  জেলা প্রশাসক মো: আতিকুর রহমানের নির্দেশে দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেগুলো ফেরত এনে অসহায় দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করেছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরব থেকে আসা দুম্বার মাংসের মধ্যে জেলার ৪ উপজেলার জন্যে এবারের বরাদ্দ ছিল মোট ২৬০ প্যাকেট। যার মধ্যে মহম্মদপুরের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬৩ প্যাকেট। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ওই বরাদ্দের মধ্যে বেশ কয়েক প্যাকেট দুম্বার মাংস মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিস মহম্মদপুর সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলা যুবলীগ, মহম্মদপুরের যুবলীগ নেত্রী শারমিন আক্তার রূপালী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কয়েকটি প্রভাবশালী সংগঠনের মধ্যে বিতরণ করে। ঘটনার পরপর বিষয়টি মাগুরা জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমানের গোচরে আনেন স্থানীয়রা।  তিনি দ্রুত ওই সমস্ত মাংস উল্লেখিত নেতাদের বাড়ি থেকে ফেরত আনার জন্যে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাদিকুর রহমানকে নির্দেশ দেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের বাড়ি বাড়ি থেকে এগুলো ফেরত নিয়ে আসেন।
মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘ভোরে ইউএনও অফিস থেকে ফোন দিয়ে দুম্বার মাংস আনার জন্য বলেছিল। আমি তাদেরকে এগুলো মিস্কিনদের মধ্যে বিতরণের জন্য বলে প্রত্যাখ্যান করেছি। পরে তারা এগুলো কাদের দিয়েছে আমার জানা নেই।’
মহম্মদপুর উপজেলা ছাত্রলীগ আহবায়ক ইদুল শেখ বলেন, ‘মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস থেকে ছাত্রলীগের জন্য কোন দুম্বার মাংস দেয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই।’
এ বিষয়টি অস্বীকার করে মহম্মদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য শারমিন আক্তার রূপালী বলেন, ‘আমার বাড়ীতে কোন দুম্বার মাংস আসেনি। এ নিয়ে কেউ বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।’
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিকুর রহমান বলেন, ‘মহম্মদপুর অফিসার্স ক্লাবে বৃহস্পতিবার সকালে মোট বরাদ্দের মধ্য থেকে ৬ প্যাকেট মাংস সংগঠন ভিত্তিতে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, মহিলা যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনকে দেয়া হয়। তবে কিছুক্ষণ পরই জেলা প্রশাসক মোবাইল ফোনে এটি ফেরত আনার নির্দেশ দিলে তা ফেরত আনা হয়। এছাড়া বাকি প্যাকেট মাংস যথাযথভাবে বণ্টন করা হয়েছে।’
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘মাংসগুলো আমরা তাদেরকে দিয়ে আসিনি। নিজ নিজ সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে বিতরণের জন্যে তারা  অফিসার্স ক্লাব থেকে নিয়ে গেছেন।’
এ প্রসঙ্গে মাগুরার জেলা প্রশাসক মোহা. আতিকুর রহমান জানান- দুম্বার মাংস গরীব মিসকিনের হক। এটি নিয়ে কোন ধরনের অপকর্ম গ্রহনযোগ্য নয়। ঘটনা জানার সাথে সাথেই আমি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিয়েছি।

মাগুরা / ২৮ ডিসেম্বর ১৭