বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে  চাকরি দেয়ার নামে এক প্রার্থীর কাছ থেকে উৎকোচ হিসেবে ৫লাখ টাকার চেক নেয়ার লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে মাগুরা-১ (মাগুরা-শ্রীপুর) আসনের  সংসদ সদস্য এটিএম আব্দুল ওয়াহ্হাব এর সহকারি একান্ত সচিব (এপিএস) আইনুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে। গত শনিবার নৈশ প্রহরী পদের ওই প্রার্থী মো: মামুনুর রহমান জেলা প্রশাসকের অফিসে মৌখিক পরিক্ষায় অংশগ্রহণের সময় এ তথ্য বেরিয়ে আসে।  তার লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমান পুলিশ সুপারের কাছে বিষয়টি তদন্তের জন্যে পাঠান। তবে এমপি আব্দুল ওয়াহ্হাব চেক লেনদেনে এ প্রসঙ্গে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।
মাগুরার জেলা প্রশাসক বরাবরে এক লিখিত অভিযোগে সদরের হাজিপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত মছিউল আজম এর ছেলে মামুনুর রহমান জানান- সরকারি চাকরির বয়সসীমা শেষ হয়ে যেতে বসায় একটি চাকরি তার খুব জরুরী ছিল। এ জন্যই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নৈশ প্রহরী পদে চাকরির জন্য আবেদন করেন তিনি। এ সময় মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্যের এপিএস আইনুল ইসলাম এমপি এটিএম আব্দুল ওয়াহহাব ও জেলা আওয়ামলীগের সভাপতির কথা বলে তার চাকরি হয়ে যাবে বলে নিশ্চয়তা দেয়। চাকরি দেয়ার কথা বলে আইনুল তার সাথে ৫ লাখ টাকার চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী চাকরি হয়ে গেলে আইনুলকে জমি বিক্রি করে ৫লাখ টাকা নগদ দেয়া কথা ছিল। কিন্তু পরিক্ষা দিতে এসে মামুনুর দেখাতে পান সেখানে দূর্ণীতিমুক্তভাবে নিয়োগ হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে তিনি স্বাভাবিকভাবেই চাকরি পেয়ে যাবেন। এ অবস্থায় তিনি আইনুলের কাছে ফোন করে তার চাকরি হচ্ছেনা জানিয়ে চেক ফেরত চান এবং কথাগুলি মোবাইলে রেকর্ড করে রাখেন। আইনুল চেক ফেরত না দিয়ে তার চাকরি হয়ে যাবে বলে এমপি ও সভাপতির দোহাই  দেন।  পরে বিষয়টি জানিয়ে চেকের ফটোকপি ও প্রমাণ জমা দিয়ে তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশ সুপার মাগুরাকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এটিএম আব্দুল ওয়াহ্হাব জানান-   টাকা লেনদেনের বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। একজন মুক্তিযোদ্ধার ছেলে হিসেবে একটি ছেলেকে নিয়োগের জন্য অনুরোধ জানিয়ে ডিসি সাহেবকে মোবাইলে একটি এসএমএস করলেও এ বিষয়ে কোন টাকা পয়সার লেনদেনের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।  এপিএস এর এ কর্মকান্ডে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, যাকেই নিয়োগ দিই। সেই এরকম করে। কি করবো বুঝতে পারছি না। এপিএস আইনুল দোষী হলে তার শাস্তি দাবী করেন তিনি।
জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমান জানান- দূর্ণীতির অভিযোগ ও সত্যতা জানার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত এপিএস আইনুল ইসলাম জানান- এমপি মহোদয় ও জেলা আওয়ামীলীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে একটি মহল এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না ।

রূপক/মাগুরা / ১৬ অক্টোবর ১৭