জিয়াউল হক, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

জমজমাট আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো চতুর্থবারের মতো আয়োজিত দেশের সর্ববৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তি আয়োজন ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড’। মেলার সমাপণী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফর্মেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি মোস্তাফা জব্বার, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) ও অ্যাক্সেস টু ইনফর্মেশন (এটুআই) কর্মসূচির পরিচালক কবির বিন আনোয়ার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদারসহ অনেকে।

রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরায় অনুষ্ঠিত ডিজিটাল মেলার শেষ দিনে শুক্রবার বন্ধের দিন হওয়ার কারণ সকাল থেকেই নানা বয়সী দর্শকের পদচারণায় মুখরিত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও এসেছে মেলায়।

পুরো মেলা আয়োজন করা হয়েছে সাতটি ভাগে। দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিগত নানা উদ্ভাবন নিয়ে মেলায় প্রদর্শনী করা হয়। ই-গভর্নেন্স জোনে আয়োজন করা হয়েছিলো সরকারের নানা মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল কর্মকান্ডের প্রদর্শনী। দেশকে ডিজিটাল করে তুলতে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের সাফল্য তুলে ধরার জন্য সাজানো হয়েছিলো স্টলগুলো।এটি একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর তত্বাবধানের ডিজিটাল সেন্টার নামে ২নং স্টলটি দায়িত্বে থাকা মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার বুনাগাতী ইউনিয়ন ডিজিটার সেন্টারের উদ্যোক্তা জনাব মুক্তি মাহমুদ খান বলেন  দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তারা তুলে ধরা হয়েছে  কিভাবে সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন সেবা তৃণমুলের জনগনের দোড়গোড়ায় পৌছে দেওয়া হচ্ছে।  তিনি তিনি আরো জানান আরো নতুন নতুন সেবা তৈরি করে ডিজিটাল সেন্টারকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নিত করাই এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।

ই-কমার্স জোনে বিভিন্ন ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের প্রদর্শনী করা হয়। একই সঙ্গে ক্রেতাদের অর্ডার নেওয়া হয়। এছাড়া ঐ জোনে অনলাইন ব্যাংকিং, অনলাইন শপিংসহ অনলাইনে কাজ করার বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সঙ্গে পরিচয় করে দেওয়া হয় দর্শনার্থীদের।
মেলা সম্পর্কে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফর্মেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, তিন দিনের এ আয়োজনে ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে তরুণ শিক্ষার্থীরা আগামীর ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছে।
মেলায় বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। গুগল ডেভেলপার গ্রুপ (জিডিজি) বাংলা ব্যবস্থাপনায় ড্রোন, রোবট প্রদর্শন করা হয়।

গুগল ডেভেলপার গ্রুপ (জিডিজি) বাংলা কমিউনিটি ম্যানেজার রাহিতুল ইসলাম রুয়েল বলেন, আমাদের উদ্ভবনী জোনে তরুণদের উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলো দেখানো হয়। গত দুই দিনসহ শেষ দিনে তরুণদের কাছে এটা ছিলো বিশেষ চমক।

তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের মতো এমন বিশাল আয়োজন আমাদের মতো আইটি নিয়ে কাজ করা মানুষদের দারুণভাবে উদ্বুদ্ধ করবে।

আয়োজনের শেষ দিন শুক্রবার সমাপনী দিনে ৩ টি হলে মোট ৬টি সেশন ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সকাল সাড়ে দশটায় ডেভেলপার কনফারেন্সে অনুষ্ঠিত হয় হল ১ এ। এতে অংশ নেন দেশ বিদেশের আইসিটি কোম্পানির প্রধান নিবার্হীগণ। একই সময়ে ‘ইউ আর নট সেইফ! ডিজিটাল সিকিউরিটি ফর এভরি সিটিজেন’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ভেন্যুর ২ নম্বর হলে সকাল সাড়ে দশটায় ‘দ্য রোড টু ৫ বিলিয়ন আইসিটি এক্সপোর্ট বাই ২০২১’ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তা হিসেবে ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। দুপুর আড়াইটায় এক নম্বর হলে অনুষ্ঠিত হয় ‘গ্রো ইওর বিজনেস উইথ ফেসবুক।’ এতে অংশ নেয় ফেসবুকের কর্মকর্তারা।

ই-হেলথ নিয়ে দুপুর আড়াইটায় আরও একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালিক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ।

প্রসঙ্গত, ‘নন স্টপ বাংলাদেশ’ থিমকে সামনে রেখে সরকারের আইসিটি বিভাগ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের সহযোগিতায় তিনদিন ব্যাপী এই মেলার আয়োজন করে। এর আগে ১৯ অক্টোবর দেশের প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

লেখক:  ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা, পবা, রাজশাহী।