মাগুরার প্রিয় মুখ, সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের প্রিয় শিক্ষক খান শফিউল্লাহ ও তার ৩ সহকর্মী রবিবার (১৭ ডিসেম্বর ১৭) বেরিয়েছেন নেপাল, ভুটান ও ভারত ভ্রমণে। তাঁদের এই ভ্রমণের সংক্ষিপ্তসার তিনি প্রতিদিন জানাচ্ছেন মাগুরাবার্তার পাঠকদের। প্রিয় শিক্ষকের ভ্রমণে সঙ্গী হবো আমরা। মাগুরাবার্তা পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি শুভ কামনা। নেপাল থেকে শুক্রবার পৌঁছেছেন ভূটান। আজ ভুটান থেকে এসেছেন ভারতে। জানিয়েছেন ১০ম দিনের ভ্রমণ বৃত্তান্ত…..
খান শফিউল্লাহ….
ভুটান সফরের মিষ্টি মধুর স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে সকালের ঘুম ভাঙলো। যথা সময়ে উগেন দা হেটেলে হাজির। উগেনদ দার অভিভাবক সুলভ নির্দেশনার জন্য থিম্পু সফর অত্যন্ত সহজ এবং আনন্দপূর্ণ হয়ে উঠেছিলো। নাস্তা সেরে সকাল ৯:০০ টায় হোটেল নেমো থেকে বিদায় নিলাম। ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭। মাইনাস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যেই থিম্পুর Folk Heritage & Museum পরিদর্শন দিয়ে শুরু হলো আমাদের আজকের যাত্রা। ভুটানের হাজার বছরের পুরাতন ঐতিহ্য অতি যত্নে সংরক্ষিত আছে এখানে। মিউজিয়াম পরিদর্শন শেষে আমরা এলাম থিম্পু আর্ট স্কুলে। সেখান থেকে National Memorial Choeten এ। ১৯৭৪ সালে এটি নির্মাণ করা হয়। এটি মূলত একটি বৌদ্ধ স্তুপা। ভুটান দেশটা দেখতে ছবির মত সুন্দর। পুরো দেশটাই পাহাড় ঘেরা। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে গড়ে উঠেছে গ্রাম, শহর, রাস্তা ঘাট। ঘর বাড়িগুলো দেখতে প্রায় একই রকম। ভুটানে পুরুষদের জাতীয় পোষাকের নাম গোঁ এবং মেয়েদের জাতীয় পোষাকের নাম কিরা। থিম্পু থেকে আমরা যাত্রা শুরু করলাম ফুন্টশলিং এর উদ্দেশ্যে। পাহাড়ের গাঁ বেয়ে আকাবাকা ভয়ংকর রাস্তা। এটি ভুটানের একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। পুরো রাস্তাটি পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে। রাস্তার চেহারা ইংরেজি S, U, Z, V বর্ণগুলো একত্রে জুড়ে দিলে যেমন হয়। আমরা কখনো মেঘের উপর দিয়ে, কখনো মেঘের ভিতর দিয়ে আবার কখনো ঝরনার পাশ ঘেষে জিকজ্যক করে এগিয়ে চলেছি ফুন্টশলিং এর দিকে। উগেন দা ১৭২ কিলোমিটার পথ অসাধারণ দক্ষতায় ৫ ঘন্টায় পাড়ি দিয়ে আমাদের সীমান্তে পৌঁছে দিলেন। ইমিগ্রেশন অফিসের আনুষ্ঠানিকতার ফাঁকে তিনি আমাদের জন্য হোটেল বুকিং করে ফেলেছেন। আমাদেরকে পরম মমতায় জয় গাঁ শহরের পরিপাটি হোটেল প্রশান্ত তে তুলে দিলেন। তাঁর চোখে মুখে যেন প্রশান্তির রেখা ফুঁটে উঠলো। চার জনের সাথে কোলা কুলি করে আমাদের শুভ কামনা জানিয়ে বিদায় নিলেন। দাদার বিদায়ের মধ্য দিয়ে শেষ হলো আমাদের ভুটান সফর।