বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

তৃণমূলের অবাধ তথ্যপ্রবাহের বিরাট এক সুযোগ সৃষ্টি করেছে দেশের সাড়ে চার হাজারেরও বেশি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি)। ইউডিসিগুলোতে কর্মরত রয়েছেন প্রায় ১০ হাজার উদ্যোক্তা, যাদের প্রতিবেদন ও ফিচার লেখায় দক্ষ করে তুলে তৃণমূলের তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে চায় সরকার। আর এ কারণেই ‘তৃণমূলের তথ্যজানালা’ কর্মসূচির আওতায় তাদের ইনফোলিডার হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।

আজ বুধবার বিকেলে মাগুরা সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ‘তৃণমূলের তথ্যজানালা’ কর্মসূচি এবং তথ্যসেবা বার্তা সংস্থা (টিএসবি) আয়োজিত প্রতিবেদন ও ফিচার লেখা এবং ই-কমার্স ও আউটসোর্সিংয়ের ওপর ৩ দিন ব্যাপী উদ্যোক্তা-প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) ও একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার বলেন, সরকার তথ্যপ্রযুক্তিকে গ্রামবাংলা পর্যন্ত সম্প্রসারিত করেছে। বর্তমান সরকারের গৃহীত উদ্যোগ বাস্তবায়নের ফলে গ্রামবাংলা ও মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিত্র তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জনগণ ও বহিঃবিশ্বের কাছে পৌঁছাতে পারেন ইউডিসি উদ্যোক্তাগণ। যে কারণে সরকার এসব উদ্যোক্তাদের প্রতিবেদন ও ফিচার লিখন এবং ই-কমার্স ও আউটসোর্সিংয়ে দক্ষ করে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা ও সক্ষমতা অর্জন করে তারা গ্রামবাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ সাফল্যের কথা প্রযুক্তির সাহায্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তুলে ধরবেন। এর মধ্য দিয়ে তারা হয়ে উঠবেন একেক জন ইনফোলিডার। কবির বিন আনোয়ার আরো বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক তৈরি করা হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলে দেশে সচ্ছতা ও ন্যায় পরায়নতা প্রতিষ্ঠিত হবে। আর এটি করবে আমাদের ডিজিটাল সন্তানরা। ডিজিটাল কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি ক্ষুদা মুক্ত, দরিদ্র মুক্ত মধ্যম আয়োর দেশে পরিনত হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সুশান্ত কুমার সাহা বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমানে অনেক প্রকল্প নিয়ে কাজ চলছে। এর অংশ হিসেবে মাগুরাতে একটি আইটি বিশ্ববিদ্যালয় হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্স (এলআইসিটি) প্রকল্পের কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট অজিত কুমার সরকার বলেন, জনকল্যাণকামী একটি সরকারের লক্ষ্য থাকে জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করা। সেই জনগণের ৭০ শতাংশেরই বাস গ্রামে। তাদের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর সারা দেশে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি ইউডিসি স্থাপন করেন তিনি। প্রতি মাসে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ এসব ইউডিসি থেকে তথ্য ও সেবা গ্রহণ করছে।

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব জনাব মো. সাইফুজ্জামান বলেন, সরকার ইউডিসি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তৃণমূলের মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে গেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগের কারণেই গ্রামের মানুষেরা এখন গ্লোবাল ভিলেজের সঙ্গে যুক্ত। সকল প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছেন।তার দূরদর্শিতা ও বলিষ্ঠতা দিয়ে তথ্য সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌছে গেছে। দেশে আজ ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক শক্তি হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নসহ বিভিন্ন উন্নয়নে বাংলাদেশর সাফল্যের কারনে বিশ্বের অনেক দেশই এখন বাংলাদেশকে অনুকরণ করে।

মাগুরার জেলা প্রশাসক জনাব মুহ. মাহবুবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্যোক্তা-প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাগুরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রোস্তম আলী, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুমার কুন্ডুসহ অন্যরা। 

অনুষ্ঠানে ‘তৃণমূলের তথ্যজানালা’ কর্মসূচির সামগ্রিক কার্যক্রমের ওপর পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন মাগুরা জেলার উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণের মাস্টার ট্রেইনার শামীম খান।

1