বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একজন চিহ্নিত রাজাকারপুত্রকে মনোনয়ন দেবার প্রতিবাদ জানিয়েছে ওই ইউনিয়ন এর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কমান্ডের সদস্যরা। গতকাল শনিবার দুপুর ১২ টায় বিনোদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার ২ শতাধিক মানুষ মাগুরায় এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় অংশ নিয়ে এ মনোনয়নের প্রতিবাদ জানান। এ সময় বক্তব্য রাখেন বিনোদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সাজেদুর রহমান সংগ্রাম, বিনোদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, বাকি বিল্লাহ। বাকি বিল্লাহ তার বক্তব্যে বলেন, ‘ আমার বাবা ইসরাঈল মোল্লা একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমার দাবী বিনোদপুরের কুখ্যাত রাজাকার চাঁদ আলী শিকদারের ছেলে শিকদার মিজানুর রহমানকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নের ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক। শুধু তাই নয়। তাকে আওয়ামীলীগে নিয়ে নৌকা প্রতীক দেয়া আরো বেশি লজ্জাজনক। রাজাকারের ছেলে কখনো রাজনীতি করতে পারেনা, বিশেষ করে আওয়ামীলীগের। তাই এই মানোনয়ন বাতিলের জন্য আমরা দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানাচ্ছি’। তিনি আরো বলেন, ‘ গত ইউপি নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। সে সময় আমরা একইভাবে মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোন প্রতিকার পায়নি। তাই একই বিষয়ে আবারো মানববন্ধন করতে হলো’। মানববন্ধনে বিনোদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান সংগ্রাম বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বোর্ড বার বার ঘোষণা দিয়েছে কোন রাজাকার কিম্বা রাজাকারের সন্তানকে মনোনয়ন দেয়া হবে না। এমনকি দলীয় সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে বার বার হুশিয়ারি দিয়েছেন। তবুও মাগুরার মহম্মদপুরের বিনোদপুর ইউনিয়নে কিভাবে রাজাকার পুত্র মিজান শিকদার বার বার মনোনয়ন পাচ্ছে তা আমরা বুঝতে পারছি না। তার বাবা একজন তালিকা ভূক্ত রাজাকার। যার ক্রমিক নম্বর ৯৩’। এ ব্যাপারে মিজানুর রহমান শিকদার বলেন, ‘ আমার বাবা চাঁদ আলী শিকদার আজীবন আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ৬০ এর দশকে তিনি মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগ থেকে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। ৮৪ সালের পর থেকে ৯৭ সাল পর্যন্ত আমার বাবা জেলা কৃষক লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান হিসেবে ২ বার নির্বাচিত হয়েছেন। পারিবারিক সূত্রেই আমি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়েছি। বর্তমানে বিনোদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি। আমার বাবা রাজাকার ছিল এরূপ কোন তথ্য প্রমাণ পাইনি। বরং তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারনে বিএনপি ও এরশাদ সরকার আমলে কারা বরণ করেছেন। চেয়ারম্যান পদে ৫ জন মনোনয়ন চেয়েছিলেন কিন্তু আওয়ামীলীগ আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। মনোনয়ন বঞ্চিতরা এতে প্রতি হিংসা পরায়ন হয়ে এ ধরনের ষড়যন্ত্র করে বেড়াচ্ছে’।

রূপক /মাগুরা / ২৩ অক্টোবর ২১