বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরা সদরের বারাসিয়া ও  পাশ্ববর্তী এলাকায় অবৈধ বাটারি কারখানার কারণে ভয়াবহ সীসা বিষক্রিয়ার  ব্যাপকতা সম্পর্কিত জনঅবহিতকরণ সভা মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে । বারাসিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর এর আয়োজনে   জেলা প্রশাসক ড.আশরাফুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর ।
আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের  ফার্মাকোলজি বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড.কাজী রফিকুল ইসলাম ও খুলনা বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ দপ্তরের উপ-পরিচালক ডা.আমিনুল ইসলাম মোল্যা। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইব্রাহিম,সিভিল সার্জন প্রদীপ কুমার সাহা,কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক,জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর অফিসার হাদিউজ্জামান,জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আশিকুর রহমানসহ অন্যরা ।
সভায় জানানো হয় ,মাগুরা সদরের বগিয়া ইউনিয়নের বারাসিয়া গ্রামের উত্তর পাড়ার মাঠের মধ্যে একটি ইট ভাটার পাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ব্যাটারি কারখানা থেকে রাতে ব্যাটারি থেকে সীসা গলিয়ে মন্ড তৈরি করা হতো । কিছুদিন পর এই গলিত সীসা জনিত বিষক্রিয়া বাতাস ও মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় । একে একে অসুস্থ হয়ে পড়ে এলাকার অনেক গরুসহ গবাদি পশু । কাঁপনি,খিচুনি,মুখে লালা পড়া ও মুখ এটেঁ যায়  গবাদিপশুগুলির মৃত্যু হয়। এ পর্যন্ত  এলাকায় মারা গিয়েছে ২৯টি গরু ।  গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এলাকায় প্রশাসনের সহায়তায় ব্যাটারি কারখানাটি বন্ধ  করা হয়। কারখানায় থাকা মালামালগুলি জব্দ করা হয়েছে । পরে দপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাটারি কারখানা আশে পাশের মাটি,ধান,গম,ঘাস সহ ১১টি স্যামপেল পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে পাঠায় । সেখান থেকে প্রাপ্ত কয়েকটি রিপোর্টে ব্যাপকভাবে সীসার বিষক্রিয়া ধরা পড়েছে ।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানের সম্বনয়ে গঠিত দল বলছে, আমরা প্রাথমিক পরীক্ষায় সীসা জনিত বিষক্রিয়ার উপস্থিতি পেয়েছি । আরো অন্যান্য দ্রব্যের পরীক্ষা চলছে । সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিস্তারিতভাবে জানা যাবে বিষয়টি কিভাবে ঘটেছে ।
জনঅবহিতকরণ সভা এলাকার জনগনকে জানানো হয়েছে,এখন থেকে এলাকার গৃহপালিত পশু ও উৎপাদিত সবজি ,ফসল না খেতে ও তা বিক্রি থেকে বিরত থাকতে হবে । কিছুদিন পর প্রশাসন থেকে জানানো হবে কবে থেকে খেতে হবে । প্রাথমিক ভাবে কারো খাদ্য সংকট থাকলে তা প্রশাসনের মাধ্যমে দেয়া হবে ।
তাছাড়া সভায় লেড পয়জনিং এর লক্ষণ, চিকিৎসা ও তার প্রতিকার বিষয়ে এলাকার জনগনকে সচেতন করা হয় । সভায় এলাকার নারী,পুরুষসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন ।
তবে এলাকাবাসির দাবী যাদের গবাদি পশু মারা গেছে ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।