পংকজ রায়,মহম্মদপুর
মাগুরায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য এক ব্যাংক কর্মকর্তার মাত্র ১০ টাকা দানের আহবানে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। আজ শনিবারে ৫০ পরিবারসহ ইতিমধ্যে ১৫৫টি পরিবারে পৌঁছে গেল খাদ্যসহায়তা। করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অসহায়দুস্থ, গরিবদিনমজুর শ্রেণির মানুষ তাদের পরিবারগুলো পড়ছে খাদ্য সংকটে। মহামারি করোনার এই সংকটপূর্ণ সময়ে সাধারণ মানুষদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন খাদ্য সহায়তা। এক্ষেত্রে করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া সাধারণ মানুষের খাদ্য সহায়তার জন্য অভিনব এক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন রুপালী ব্যাংক লিমিটেড, মাগুরা কর্পোরেট শাখার কর্মকর্তা সন্দীপন বিশ্বাস। যেখানে অনেকেই তাদের দ্বায়িত্ব থেকে পালাচ্ছেন, সেখানে এই ব্যাংক কর্মকর্তা নিয়মিত সরকারি দ্বায়িত্ব পালনের পরেও অসহায়ের মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দিতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

 

আজ শনিবার চতুর্থ দফায় মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের ৫০জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র দোকানীর মাঝে তাঁর ফেসবুক গ্রুপকরোনায় অসহায় মাগুরাবাসীর জন্য খাদ্যসহায়তাএর মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবকগণ খাদ্যসহায়তা প্রদান করেন। এদফায় অন্যান্যদের সাথে তাঁকে আর্থিক সহায়তা করেছেন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ) এর কেন্দ্রীয় সদস্য, বঙ্গবন্ধু সাহিত্য একাডেমী সহসভাপতি, মহম্মদপুরের কৃতি সন্তান সংগীতা বিশ্বাস। আর অনুদান বিতরণে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন মহম্মদপুর আমিনুর রহমান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ এবং মহম্মদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি জনাব জি এম বিপ্লব রেজা বিকোসহ সাংবাদিক পংকজ রায়, অলোক রায়, মোরাদ হোসেন এবং পিকিং গুহ।

১০টি টাকা বিকাশ করুন, পারলে বেশি, অভুক্তকে আহার দিয়ে, আকাশ সমান মিলবে খুশি’ – এই স্লোগানকে উপজীব্য করে মাগুরায় সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সন্দীপন বিশ্বাস তার গ্রুপ।করোনায় অসহায় মাগুরাবাসীর জন্য খাদ্যসহায়তাশিরোনামে একটি ফেসবুক গ্রুপ গ্রুপ খুলে পরিচিতদের সহায়তা দানের আহবান জানান তিনি। সন্দিপন বিশ্বাস জানান, “ছোট ছোট সহায়তাই বড় বড় মানবিক প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম। ১০টি টাকারও অনেক শক্তি। আমাদের অনেকেরই ইচ্ছা থাকে, মানবিক কাজে এগিয়ে আসার। কিন্তু, আর্থিক দুর্বলতার কারণে অনেক সময় আমরা দানে উৎসাহিত হই না, লজ্জা বোধ করি। কিন্তু আমরা যদি আমাদের অল্প অল্প স্বক্ষমতাগুলো জোড়া দেই, সেটাও বড় কিছু হয়ে উঠতে পারে।তিনি যোগ করেন, “বিকাশ বা রকেটে সর্বনিম্ন ১০টাকা পাঠানো যায়। আমরা শুরুতে আমাদের গ্রুপে সেই ১০টি টাকা পাঠানোর আহবান জানাই অনেকেই আমাদের এই আহবানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, বন্ধু, অফিস কলিগ, ছোটবেলার বন্ধুসহ অনেকেই এগিয়ে আসেন। আমরা ১০টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০টাকা পর্যন্ত সহায়তা পেয়েছি।

 

এই ছোট্ট উদ্যোগ থেকেই এখনো পর্যন্ত চার দফায় ১৫৫টি পরিবারে খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন তিনি তাঁর স্বেচ্ছাসেবকগণ। বিগত এপ্রিল নিজের জন্মদিনে বড়বোন সংগীতা বিশ্বাস অন্যান্য বছরের মত ভাইকে উপহার না পাঠিয়ে ৫০টি পরিবারকে খাদ্যসহায়তা তুলে দেন যা তাঁকে গভীরভাবে ভাবিয়েছে। সন্দীপন জানান, “বড় বোনের এই মহতী উদ্যোগ আমাকে অসহায়ের পাশে দাঁড়ানোর দ্বায়িত্ববোধ এনে দিয়েছে। আমি উপলব্ধি করেছি, আমাদেরযার যা আছে, তাই নিয়েযদি অসহায়ের পাশে দাঁড়াতে পারি, তবেই প্রকৃত পক্ষে করোনার ক্ষতি মোকোবেলাকরে একটি সোনার বাংলাদেশ দেখতে পাবো আমরা।

 

তিনি সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “যে কেউ চাইলে এই কনসেপ্টকে কাজে লাগিয়ে নিজ জেলার অসহায় মানুষের জন্য কিছু করতে পারেন। মানুষের জন্য কিছু করতে পারাটাই আমাদের জন্য বড় সার্থকতা।অর্থসহায়তা দিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়াতে চাইলে বিকাশ/ রকেট আপনার সাধ্যমত টাকা পাঠিয়ে দিন এই নাম্বারেবিকাশ 01710565860 (পার্সোনাল) রকেট 017105658601 (পার্সোনাল)

 

মাগুরা/ মে/ ২০২০