বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার সরকারী আর এস কে এইচ ইনস্টিটিউশন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কেএম নাসিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। আজ বুধবার  উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বাদি হয়ে মহম্মদপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং (০৭/ ১৩.০৩.১৯)

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মামলায় অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক নাসিরুল ইসলাম তার পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্পদ ও সুনামের ব্যপক ক্ষতিসাধন করেছেন। তিনি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণীর ছাত্রছাত্রী ভর্তি ও অন্যান্য শিক্ষকদের নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করাসহ নানা রকম অনৈতিক কাজের দ্বারা ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন। ২০১৮ সালে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির ক্ষেত্রে ১৬০ সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত আরো ৪৩জন শিক্ষার্থীকে একক সিদ্ধান্তে ভর্তি করেছেন, যারা কেউই কোটাধারী নয় অথবা ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়নি কিংবা উক্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেনি। এ ক্ষেত্রে তিনি বিদ্যালয়ের সভাপতি, ম্যানেজিং কমিটি অথবা সংশ্লিষ্ট অন্য কারো মতামতও গ্রহণ করেননি। এই অতিরিক্ত সংখ্যক ছাত্রছাত্রী ভর্তির বিষয়টি মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে সম্পন্ন হয়েছে, আর এই ধরণের কাজ তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের শুরু থেকেই করে আসছেন। মামলার বাদি মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন আরো অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যৌথ স্বাক্ষরে ব্যাংকের হিসাব পরিচালনার বিধান থাকলেও তিনি তার একক স্বাক্ষরে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুটি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করে আসছেন। এবং বিভিন্ন খাত হতে বিদ্যালয়ের অনুকূলে উপার্জিত অর্থের সিংহভাগ তিনি কখনই ব্যাংকে জমা করেননি। তিনি ও তার পরিবার এমন সম্পদের মালিকানা অর্জণ করেছেন, যার হিসাব দিতে তিনি অপারগ ও যা তার প্রক্যাশ্য আয়ের সাথে সংগতিবিহীন। তিনি ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির জনবল নিয়োগের জন্য জেলা শিক্ষা অফিসের একটি অফিস আদেশ জাল করেন এবং অনুমোদিত জনবল কাঠামোর বাইরে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। মামলার বাদি আরো অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের বেতন ও অন্যান্য উৎস হতে প্রাপ্ত অর্থের বড় একটি অংশ তিনি সিগারেট, চা ও পান-জর্দার মতো ব্যক্তিগত বদঅভ্যাসের পেছনে ব্যায় করেছেন। বিগত ২০১৫ সালে তিনি বিদ্যালয় জাতীয়করণের নামে বিভিন্ন শিক্ষকের কাছ থেকে ২৫লাখ টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করেন। যা দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(১) ধারার (সি), ৫(১) ধারার (ডি), ৫(১) ধারার (ই) এবং দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪০৬ ধারার অধীনে বিচার্য অপরাধ।

মহম্মদপুর থানার ওসি মো. রবিউল হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান- দুদক মামলাটি তদন্ত করবে।