বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
মাগুরা সদর উপজেলার বেরইলপলিতা ইউনিয়নের চেঙ্গারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্ত্বরের লক্ষাধিক টাকা দামের ৩টি গাছ কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই কেটে নিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান । এর ফলে তীব্র গরমে কষ্ট পাচ্ছে ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গিয়ে একটি গাছ রক্ষা করতে পারলেও বাকি দুটি গাছ নিয়ে গেছে ব্যাপারীরা।
ওই স্কুলের সহকারি শিক্ষিকা বিভাবতী রায় জানান, ১৯৮৬ সালের থেকে আমি এ স্কুলে চাকরি করি। স্কুলের এ জমিটি আমার শ্বশুর দান করে ছিলেন। এ গাছগুলো আমার নিজ হাতে লাগানো ছিল।  এখানে এই গাছের নিচে আমার স্কুলের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা খেলাধুলা করতো। অনেক সময় গরমের কারনে গাছের নিচে বসে তাদের পড়াশুনা করিয়েছি। হঠাৎ করে ইউপি চেয়ারম্যান মহব্বত আলী এই গ্রামের বিদ্যুৎ রায়কে দিয়ে গ্রীষ্মের ছুটির মধ্যে গাছগুলো কেটে ফেলেছে। ইতিমধ্যে দুইটি বাবলা গাছ নিয়ে  গেছে। রেনট্রি কড়াই গাছটি অনেক বড় হওয়ায় এখনও নিতে পারেনি। এখন এই গরমের মধ্যে আমরা নিজেরাই টিকতে পারছিনা। সেখানে ছোট ছোট শিশুদের আরও কষ্ট হচ্ছে।
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুর আলী বিশ্বাস জানান, স্কুল বন্ধ থাকায় ১দিন পরে এখানকার স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারি। সাথে সাথেই আমি সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। তার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ পরদিন এসে গাছ নিতে বাধা দেয়। এর আগেই দুইটি বাবলা গাছ এখান থেকে নিয়ে গেছে চেয়ারম্যানের লোকজন। এখন একটি গাছ এখানে পড়ে আছে।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অসিত কুমার বিশ্বাস জানান, ম্যানেজিং কমিটি ও স্কুলের শিক্ষকদের অজান্তে প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহব্বত আলী গাছগুলো কেটে নিয়ে গেছেন । আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
স্কুলের গাছ কাটার বিষয়ে বেরইল পলিতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহব্বত আলীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- ওই গাছ স্কুলের না। রাস্তা করা হবে এ জন্য গাছগুলো কেটে ফেলেছি। সরকারি গাছ কোন প্রকার সরকারি অনুমোদন ছাড়া কাটার এখতিয়ার আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, অনুমোদনের প্রয়োজন হয়, তবে দুই/তিনটি গাছ কাটার জন্য অনুমোদন করাতে গেলে অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার সে কারনে আমি গাছগুলো বিদ্যুৎকে বিক্রি করতে বলেছি। এই গাছ বিক্রির টাকা আর কিছু টাকা দিয়ে স্কুলের বাউন্ডারী করে দেব।
মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান জানান, আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো। সরকারি সম্পত্তি যদি কেউ আত্মসাত করে থাকে তার বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নেব। সে যেই হোক না কেন।

রূপক /মাগুরা / ৯ মে ১৮