মাগুরার প্রিয় মুখ, সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের প্রিয় শিক্ষক খান শফিউল্লাহ ও তার ৩ সহকর্মী রবিবার (১৭ ডিসেম্বর ১৭) বেরিয়েছেন নেপাল, ভুটান ও ভারত ভ্রমণে। তাঁদের এই ভ্রমণের সংক্ষিপ্তসার তিনি প্রতিদিন জানাচ্ছেন মাগুরাবার্তার পাঠকদের। প্রিয় শিক্ষকের ভ্রমণে সঙ্গী হবো আমরা। মাগুরাবার্তা পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি শুভ কামনা। নেপাল থেকে তিনি জানিয়েছেন ৫ম দিনের ভ্রমণ বৃত্তান্ত…..
খান শফিউল্লাহ……
২১ ডিসেম্বর, ২০১৭। ভোর ৫:৩০ টায় বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম আমরা চারজন। সকাল ৭:০০ টায় কাঠমুন্ডুর উদ্দেশ্যে রওনা হতে হবে। হোটেল বারান্দায় দাঁড়িয়ে পোখারা ছাড়ার আগে শেষবার অন্নপূর্ণার সৌন্দর্য দেখে নিলাম। ড্রাইভার ভলা গুরুঙ যথা সময়ে হাজির। হোটেল থেকে ট্যাক্সিতে পৌছে দিলেন পোখারা বাস টার্মিনালে। পোখারা হাইকোর্ট সংলগ্ন বাসটার্মিনাল থেকে আমাদের বাস মেট্রো ইন সকাল ৭:৩০ টায় কাঠমুন্ডুর উদ্দেশ্যে রওনা হলো। বাস টার্মিনালে এসেই মোখলেছ স্যার ছবি তুলতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লেন। মোখলেছ স্যার প্রায় এক মাস নেট ঘেটে ট্যুর প্লানটি তৈরি করেছেন। কাঠমুন্ডু আসার পর প্লানটিকে মডিফাই করে আরো সুন্দর করে দিয়েছেন নেপালে আমাদের গাইড রাজন শর্মা। রাজন নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট। কিছুদিন কাঠমুন্ডুর একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। পরে তিনি শিক্ষকতা ছেড়ে পর্যটন ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন। শিক্ষকদের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা অপরিসীম। মোখলেছ স্যার ট্যুরে ছবি তোলার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করে চলেছেন। দেলোয়ার স্যার আমাকে লেখার কাজে সহযোগিতা করছেন ছায়ার মত পাশে থেকে। আর আমার গর্বিত ছাত্র বর্তমানে কলিগ সুব্রত লেখার উপাত্ত যোগাতে সদা ব্যাস্ত। আমাদের বহনকারী বাস পাহাড়ের আকাবাঁকা উঁচুনিচু পথ বেয়ে এগিয়ে চলেছে কাঠমুন্ডুর দিকে। সকাল ৯:০৫ টায় গুনাদি হাইওয়ে রেষ্টুরেন্ট এ ২০ মিনিট নাস্তার বিরতি শেষে বাস আবার চলতে শুরু করেছে। পিছনে পড়ে রইলো নেপাল রানী পোখারা। স্মৃতিপটে জেগে থাকলো হিমালয়ের অপরূপ সৌন্দর্য আর নয়নাভিরাম দৃশ্যমালা। বেলা ১১:৩০ টায় আবার ২৫ মিনিটের যাত্রাবিরতি। এবার লান্স সেরে নিতে হবে। মালেখু এর দা ব্লু হেভেন রেষ্টুরেন্টে বুফে লান্স করতে বসে গেলাম। কাঠমুন্ডু পৌঁছাতে ৪:৩০ টা বেজে যাবে। তখন আর লান্সের সময় থাকবে না। দুপাশে বিশাল পাহাড়মালা। মাঝ দিয়ে বয়ে চলা হিমালয়ান রিভার। পাহাড়ের মাঝে বয়ে চলা নদীর সৌন্দর্য আর পাহাড়ের বিশালতা এ দুয়ের সম্মিলনে মনের মাঝে জন্ম নেয় সম্পূর্ণ নতুন এক অনুভূতি। কাঠমুন্ডু থেকে বিমানে পোখারা যাওয়া যায়। তবে বিমান যাত্রায় ২০০ কিলোমিটার পাহাড়ী সর্পিল রাস্তা আর হিমালয়ন রিভারের অপরূপ সৌন্দর্যের দেখা মিলবে না হয়তো। বিকাল ৪:৩০ টায় বাস থামেল বাস স্ট্যান্ডে এসে পৌছালো। সেখান থেকে রাজন আমাদের রিসিভ করে হোটেল ডালিতে নিয়ে এলেন। হোটেলে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে রাজনের সাথে থামেল শহর ঘুরতে বের হলাম। কাঠমুন্ডুর থামেল শহর মূলত ট্যুরিষ্ট হাব হিসেবে পরিচিত। শহরের অলিগলিতে শুধুই ট্যুরিষ্টদের দেখা মেলে। ইউরোপ, আমেরিকা, চায়না এমন কি ভারতেরও প্রচুর পর্যটকের দেখা পেলাম এখানে। আগামীকাল আমরা যাত্রা করবো ভুটানের উদ্দেশ্যে। সবকিছু ঠিক থাকলে বেলা ১:৩০ টায় তুর্কি এয়ারওয়েজের বিমান আমাদের নিয়ে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে পারোর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। আমরা আপনাদের দোয়া প্রার্থনা করছি।
রূপক/মাগুরা/২১ ডিসেম্বর ১৭