বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরায় পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিল আদায়ের নামে গ্রাহক হয়রানি, দূর্ণীতি ও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জেলার শ্রীপুর উপজেলার টুপিপাড়ার গ্রাহক পারিজাত বিশ্বাস অমল অভিযোগ করে বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সীমাহীন শোষণ, লাগামহীন দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছারিতা এখন চরমে উঠেছে। বৃহস্পতিবার সকালে বিল দেয়ার পরও তার বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে গেছে পল্লী বিদ্যুতের কর্মচারিরা। তাদেকে বিদ্যুৎ পরিশোধের বিল দেখালেও তারা তার কথায় কর্ণপাত করেনকি বলে জানান তিনি। তিনি বলেন- বাড়িতে আমার মা অসুস্থ। ওদেরকে বারবার বলেছি সকালে, আমি বিদ্যুৎ বিল দিয়ে এসেছি। অথচ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লোক আমার কোন কথাই শোনে নি। ঘটনার পরপর শ্রীপুর সাব-জোনাল অফিসে অভিযোগ করলে তারা তিনশো টাকা স্টাম্প ও অন্যান্য খরচসহ প্রায় এক হাজার টাকা লাগবে বলে জানান। আমি এখন টাকা কোথায় পাব?
মাগুরা সদরের নরসিংহাটি গ্রামের গ্রাহক ইকবাল হোসেন বলেন, ভৌতিক বিল ঠিক করার জন্য পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গেলে তারা উদ্বৃত্ত বিল পরের মাসে সমন্বয় কারার আশ্বাস দিয়ে গ্রাহক হতে বাড়তি বিল আদায় করছে। গ্রাহকরা অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে অফিস থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুমকিও প্রদান করছে। ফলে গ্রাহকরা হয়রানির ভয়ে বিদ্যুৎ বিল প্রদান করতে বাধ্য হচ্ছে। তার উপর বিদ্যুৎ বিলের সাথে মিটার রিডিংয়ের ব্যাপক গড়মিলও রয়েছে। একই রকম অভিযোগ করেন আড়পাড়া, বুনাগাতি, পুলুম, গঙ্গারামপুর বাজারের অনেক ব্যবসায়ীরা।
মাগুরা গণকমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ জাসদের মাগুরার সভাপতি এটিএম মহব্বত আলী বলেন, গ্রামের মানুষের সীমিত আয়। তাছাড়া করোনাকালিন সময়ে মানুষের তেমন উপার্জন নেই। এই দুঃসময়ে বাড়তি বিলের বোঝা নির্মম পরিহাস ব্যতীত আর কি হতে পারে না? পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের মাধ্যমে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করলে বৈদ্যুতিক মিটার ও বিদ্যুৎ সংযোগ অতি দ্রুত সময়ে পাওয়া যায়, অন্যথায় বছরের পর বছর ঘোরাঘুরি করলেও বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যায় না। এরকম অনেক অভিযোগ আমার কাছে প্রায়ই আসে। কিন্তু এসব অভিযোগের কোন সমাধান হচ্ছে না।
অভিযোগ ও গ্রাহক হয়রানীর ব্যাপারে মাগুরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার রবীন্দ্রনাথ দাস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এমন কোন অভিযোগ আমার কাছে আসে নি। আমরা প্রত্যেক গ্রামে মাইকিং করেছি বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার জন্য। কারো যদি বিল বকেয়া থেকে থাকে সেক্ষেত্রে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে। আর নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করলে বৈদ্যুতিক মিটার ও বিদ্যুৎ সংযোগ অতি দ্রুত সময়ে পাওয়া যায়। কারণ এখন সবকিছু অনলাইনের মাধ্যমে করা হয়। তবে এই মূহুর্তে নতুন সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না, কারণ আমাদের মিটার নেই। জুলাই মাসে আবার মিটার আসলে তখন নতুন সংযোগ দেয়া হবে বলে তিনি জানান।

রূপক /মাগুরা /২৬ জুন, ২০২১