বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্ তা
মধুমতির করাল গ্রাসে হারিয়ে যেতে বসেছে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদ। চোখের সামনে নদীর গর্ভে চলে যাচ্ছে বাড়িঘর, গাছপালা, আবাদি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ৫০ বছরেরও অধিক সময়ের ভাঙনে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন ১৪টি গ্রামের নদী তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষ। এসব নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন এবং উপজেলার অফিসারবৃন্দের সাথে মতবিনিময়ের নামে ব্যানার টানিয়ে ডিজে পার্টি করেন ইউএনও মো. মিজানূর রহমান। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার অফিসার্সক্লাবের সদস্য প্রতি এক হাজার টাকা করে নিয়ে গত শনিবার বিকেলে নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শণ এবং উপজেলার অফিসারবৃন্দের সাথে মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়। যার প্রধান অতিথি ছিলেন মাগুরা জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম। দেখা যায়, নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শণের নামে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবার নিয়ে ওই দিন বিকাল ৪টার দিকে মধুমতি নদীতে নৌকা ভ্রমনে বের হয় কর্মকর্তারা। তারা নৌকায় চড়ে মাইক ও সাউন্ড বক্সের গানে আনন্দ করতে থাকেন। সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদে ফিরে আলোকসজ্জায় সজ্জিত প্যান্ডেলে রাত ১০টা পর্যন্ত আয়োজিত মতবিনিময় সভার নামে বিভিন্ন শিল্পিদের গান শুনে ডিজে পার্টি করেন তারা। এরপর রাতের ভোজে সকলে অংশ নেন। শতাধিক লোকের এমন আয়োজনে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সমালোচনার ঝড় ফেলে।

এমন আয়োজনে আনুষ্ঠানিকতা রক্ষার্তে কর্মকর্তারা যান বলে জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, “কোথায় যে ভাঙন দেখছি তা তো কইতে পারবো না। নৌকায় শুধু বসে ছিলাম। যাওয়ারই ইচ্ছা ছিলো না। না গেলে তো চলে না। সরকারি চাকরি করি।” সহিদুল্লাহ সোহাগ নামে উপজেলার এক বাসিন্দা জানান, “নদী ভাঙন পরিদর্শন শেষে গান বাজনা হওয়ার কথা নয়। নদী ভাঙা মানুষদের জন্য সহমর্মিতা দেখানোর কথা। তাদের জন্য দোয়া, আলোচনা করার কথা।” ইয়াসিন আরাফাত নামে এক ব্যক্তি জানান, করোনার মধ্যে এগুলো না করলেও পারত প্রশাসন। এগুলো করতে থাকলে পাবলিক সামলাবে কেমনে? অনুসন্ধানে জানা যায়, ইউএনও মো. মিজানুর রহমান সম্প্রতি বদলির আদেশ পেয়েছেন। অফিসারদের বিনোদন দেওয়ার জন্য নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শণ এবং উপজেলার অফিসারবৃন্দদের সাথে মতবিনিময়ের নামে এসব আয়োজন করেন।

রূপক /মাগুরা