বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
মাগুারর মহম্মদপুর উপজেলা সদরের ঢুষরাইল গ্রামের আনোয়ারুল উলুম হফেজিয়া মাদ্রাসার পেছনের ঝোপের মধ্যে থেকে বুধবার ভোরে চারটি টি বোমাসদৃশ বস্তু উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। পরে পুলিশ এসে সেগুলো উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও এলাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মাদ্রসার শিক্ষক হাফেজ কুতুব উদ্দিন জানান, ভোরে তিনি প্রথমে বোমাসদৃশ বস্তু চারটি দেখতে পান। সেগুলো মাদ্রাসার পাশের কয়েকজন বাসিন্দাকে ডেকে দেখান তিনি। পরে বিষয়টি মোবাইলে মাদ্রসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা বিল্লাল হোসেন মোল্যাকে জানানো হয়। তিনি ঘটনাটি পুলিশকে জানান। বিল্লাল হোসেন মাদ্রাসা থেকে ৫০গজ দূরে নিজ বাড়িতে বসবাস করেন। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল এসে পানিভর্তি বালতিতে সেগুলো রেখে দেয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বোমাসদৃশ বস্তুগুলো কৌটার আকৃতি। লাল টেপ দিয়ে মোড়ানো। বৈদুতিক দুটি তার দেখা গেছে। মোবাইলের গায়ে মাদ্রসার প্রতিষ্টাতা মাওলানা বিল্লাল হোসেন মোল্যার মোবাইল নম্বর লিখে কসটেপ দিয়ে সাঁটানো আছে। স্থানীয়দের মতে এগুলো রেখে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির পরিকল্পনা ছিল দুর্বৃত্তদের। গত মঙ্গলবার রাতের কোনো একসময় কে বা কারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির আশপাশে এগুলো রেখে যায়।
মাদ্রাসার পাশের স্থায়ী বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মাওলানা বিল্লাল হোসেন মোল্যা মাদ্রাসার ছাত্র শাহাবুদ্দিনকে অন্যের গাছের আম পাড়ার অপরাধে সম্প্রতি মারধোর করেন। সাহাবুদ্দিন (১২) পাশ্ববর্তি হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের সৈয়দ শওকত আলীর ছেলে। এই ঘটনায় নিতে মাদ্রাসার শিক্ষকদের হয়রানি করতে এ ধরনের ঘটনা কেউ ঘটাতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ ও এলাকাবাসী। এবিষয়ে জানার চেষ্টা করলেও সৈয়দ শওকত আলীকে বাড়ি পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে জানা গেছে, মাদ্রাসার পাশের বাসিন্দা মাওলানা বিল্লাল হোসেন মোল্যা ২০১০ সালে নিজের কেনা জমিতে আনোয়ারুল উলুম হফেজিয়া নামের হাফেজিয়া মাদ্রাসা চালু করেন। ইটের দেয়াল ও টিনের চালের চারকক্ষ বিশিষ্ট মাদ্রাসায় ২৫ জন ছাত্র রয়েছে। মাওলানা বিল্লাল ও হাফেজ কুতুবউদ্দিন এখানে শিক্ষকতা করেন। মাওলানা বিল্লাল হোসেন মোল্যা মাদ্রাসার পাশের ঢুষরাইল গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা।
তিনি ওই গ্রামের মৃত হাসেম মোল্যার ছেলে। স্ত্রী আয়েশা এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার। মাওলানা বিল্লাল হোসেন মোল্যা ২০০৮-২০১০ সাল পর্যন্ত চট্রগ্রামের হাটহাজারি দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম কওমী মাদ্রসায় পড়া লেখা করেন। অপর শিক্ষক হাফেজ কুতুব উদ্দিন নড়াইলের লোহাগড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি প্রায় ২৫ বছর ধরে এই এলাকার বিভিন্ন মাদ্রসায় শিক্ষকতা করছেন।
মাওলানা বিল্লাল হোসেন মোল্যা বলেন,‘ ষড়যন্ত্র করে আমাকে হয়রানি করার জন্য এ ঘটনা সাজানো হয়েছে।’
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম বোমাসদৃশ বস্তু উদ্ধারের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এসআই শাহাবুর ঘটনাস্থলে গেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। কেউ কাউকে হয়রানি করার জন্য এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ’
শাহীন/ মহম্মদপুর/ মাগুরা /২৬ এপ্রিল ১৭