ক্রিড়া ডেস্ক

গতকাল মঙ্গলবার সকালে অনুশীলন চলার সময় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ককে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হবে না। ম্যাচের আগে মনোযোগে ‘বিঘ্ন’ ঘটার আশঙ্কায়ই এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের।

ঘরের মাঠে যুব বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে আজ। প্রথম ম্যাচেই বর্তমান কাপ চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি প্লেট চ্যাম্পিয়ন স্বাগতিক বাংলাদেশ। এমন একটা উদ্বোধনী ম্যাচের আগে অধিনায়কের কথা না বললে কী হয়! শেষমেশ অবশ্য এলেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ।
কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত? তবে কি চাপটা জেঁকে বসেছে দলের ওপর? যুবাদের কোচ মিজানুর রহমান অবশ্য চাপ-টাপের কথা উড়িয়ে দিলেন, ‘চাপ ঠিক নয়। এ টুর্নামেন্টের জন্য আমরা দেড় বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি। খেলোয়াড়দের বয়স অল্প। মনোযোগটা যাতে খেলার বাইরে না যায়, সেটাই বলা হচ্ছে। কথা তো তারা বলছেই। তবে অতিরিক্ত কথা বলে মনোযোগটা যেন নষ্ট না হয়।’
বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয়বার দলকে নেতৃত্ব দেওয়া মিরাজও চাপকে বড় করে দেখছেন না। বরং তাঁদের প্রতি সবার প্রত্যাশাকে স্বাভাবিকভাবেই নিচ্ছেন তিনি, ‘বাইরের কিছুতেই মনোযোগ দিচ্ছি না। ও রকম কোনো চাপ নেই। ঘরের মাঠে খেলা, মানুষের প্রত্যাশা স্বাভাবিকভাবেই বেশি থাকবে।’
কাল অনুশীলনে বাংলাদেশ যুবাদের বেশ চনমনে দেখাল। হোম কন্ডিশন, অভিজ্ঞতা, সাম্প্রতিক সাফল্য তো বটেই, প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকাও আত্মবিশ্বাসী করছে মিরাজদের। বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া এ দলটিকেই যে সবচেয়ে ভালো চেনেন বাংলাদেশের যুবারা!416e2456bb5fbfd1d72c6c305cae761c-31
বাংলাদেশকে আশা জোগাচ্ছে দুই দলের সর্বশেষ লড়াইয়ের ফলও। গত এপ্রিলে বাংলাদেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার যুবারা হেরেছে ৬-১ ব্যবধানে। দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েও প্রোটিয়া যুবাদের তাঁরা হারিয়ে এসেছেন ৫-২-এ। সব মিলিয়ে গত এক বছরের ফলাফল বাংলাদেশ ১১: ৩ দক্ষিণ আফ্রিকা। আজকের ম্যাচে সে কারণেই বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখছেন কোচ মিজানুর রহমান, ‘প্রস্তুতি ম্যাচে আমরা ইংল্যান্ডকে হারিয়েছি। তাদের সম্পর্কে কোনো ধারণাই ছিল না। সে তুলনায় দক্ষিণ আফ্রিকা অনেক সহজ। কারণ, এ দল সম্পর্কে আমরা ভালো জানি। তা ছাড়া খেলাটা আমাদের মাঠে। মানসিকভাবে আমরাই এগিয়ে থাকব।’
দক্ষিণ আফ্রিকার দলটাকে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ যতটা ‘সহজ’ ভাবছেন, অধিনায়ক ততটা ভাবছেন না। কারণ, আত্মতুষ্টিতে ভুগলে সহজ প্রতিপক্ষ মুহূর্তেই হয়ে উঠতে পারে কঠিন। ‘দক্ষিণ আফ্রিকা দল সম্পর্কে আমরা ভালো জানি। তবে তাদের হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। ক্রিকেটে ভালো-খারাপ দুই দিনই আসে। তাদের আমরা হারিয়েছি, তাতে আত্মতৃপ্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আগে ওদের হারিয়েছি, এটা মাথা থেকে সরিয়েই মাঠে নামব’—বলেছেন অধিনায়ক মিরাজ।
প্রোটিয়া বাধা পেরোতে পারলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা অনেক সহজ হয়ে যাবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের জন্য। গ্রুপে আরও আছে স্কটল্যান্ড ও নামিবিয়া। ছোট ছোট এই দুই বাধা পেরোতে পারলেই স্বপ্নপূরণে বড় এক ধাপ এগোবেন মিরাজরা। পরে আর যা-ই হোক, অন্তত প্লেট খেলার ‘যন্ত্রণা’ সইতে হবে না তাঁদের!