তাছিন জামান,স্টাফ রিপোর্টার,মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

গত ৩ বছর  রাধানগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়নি। অথচ এ বাবদ নেয়া বিদ্যালয়ের ফান্ডের ৭৫ হাজার টাকা খরচ করে ফেলেছে বিদ্যালয়ের পূর্ববর্তি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও কমিটির লোকজন।

এসব খরচের কোন হদিস পাচ্ছেন না বর্তমান প্রধান শিক্ষক ও কমিটি। এ নিয়ে এলাকাবাসির মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বিদ্যালয়ের নতুন ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য মোঃ রোজব আলী বিঃ মাগুরা বার্তা কে বলেন বিদ্যালের ফান্ডে কোন টাকা নাই, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া হতো তা বিদ্যালয়ের ব্যাংক এ্যাকাউন্টে জমা না করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শি: নির্মল কুমার বিশ্বাস সহ অন্যান্য শিক্ষকরা ভাগাভাগি করে নিত বলে জানান তিনি। তবে বিষয়টির জন্য তিনি পুরোটাই দায়ী করছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নির্মল কুমার বিশ্বাসকে। কারন তিনি বিদ্যালয়ের ব্যাংক একাউন্টের অপোরেটর হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।

তিনি জানান নির্মল কুমার বিশ্বাস ০১-০১-১৫ থেকে ২৫-০৬-১৫ পাঁচ মাস চব্বিশ দিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, এই স্বল্প সময়ে তিনি জনপ্রিয় হতে পারেননি শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের কাছে। এসছে দুনীর্তির অভিযোগ। হতে চেয়েছেন প্রধান শিক্ষক, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থেকে পদত্যাগ করে আবেদন করেন প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য। তার পর ২৬-০৬-১৫ তারিখে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে হিসেবে নিযুক্ত হন বিদ্যালয়ের ইসলাম ধর্মের শিক্ষক  আশরাফুল আলম। কিন্তু তখন পরিবর্তন করা হয়নি বিদ্যালয়ের ব্যাংক এ্যাকাউন্টের অপোরেটর নির্মল কুমার বিশ্বাসকে।

ব্যাংক অপোরেটর হিসেবে থেকে যান তিনি,আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভুয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেজে সাক্ষর দিয়ে ব্যাংক থেকে বিদ্যালয়ের ফান্ডের টাকা তুলে নেন এমনটাই মাগুরাবার্তা  কে জানান বিদ্যালয়ের নতুন ম্যানেজিং কিমিটির অভিভাবক সদস্য মোঃ রোজব আলী বিশ্বাস।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নির্মল কুমার বিশ্বাস ও আশরাফুল আলম কাছে বার্ষিক ক্রীড়া না হওয়ার কারন জানতে চাইলে তারা বলেন – বার্ষিক ক্রীড়ার জন্য এক লক্ষ টাকা খরচ হবে । কিন্ত বিদ্যালয়ের ফান্ডে পর্যাপ্ত টাকা না থাকার কারনে বার্ষিক ক্রীড়া হয়নি। যে টাকা ছিল তা বিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাতে খরচ করা হয়েছে। তিনি বলেন শুধুমাত্র প্রাধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে ।

তবে বিদ্যালয়ের ফান্ডের দূর অবস্থার কথা উল্লেখ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক এই দূর অবস্থার জন্য দায়ী করেন অব:প্রধান শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র কুন্ডু, সাবেক ভারপাপ্ত প্রধান শিক্ষক নির্মল কুমার বিশ্বাস ও তাদের একান্ত সহযোগী শিক্ষক মোশারফ হোসেন কে। বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের দশম শ্রেনীর মেধাবী শিক্ষার্থী সপ্না কুন্ডু, নাজমিন নাহার, সাজ্জাদ, অন্তর সাহা মাগুরা বার্তা  কে জানান তারা ভর্তির সময় প্রতি বছর ই বার্ষিক ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান জন্য টাকা দিয়ে আসছে। কিন্তু তিন বছর ধরে তাদের বিদ্যালয়ে কোন বার্ষিক ক্রীড়া বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় নি। তারা চান অন্যান্য বিদ্যালয়ের মত তাদের বিদ্যালয়েও বার্ষিক ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রতি বছর ই যেন করা হয়।

14409200_938809202913127_1651708174_n

তবে বর্তমানে প্রধান শিক্ষক মোঃ নওয়াব আলী মাগুরা বার্তা কে বলেন তিনি কেবল মাত্র আট মাস এসেছেন বিদ্যালয়ে এসে দেখেন বিদ্যালয়ের কোন ফান্ডই কোন টাকা নেই। এর কোন সঠিক কাগজ পত্রও তিনি খুজে পাননি।

তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন- এখন থেকে প্রতি বছর ই বার্ষিক ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে। আগামী বছর জানুয়ারী মাসের বিশ তারিখের মধ্যে বার্ষিক ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হবে বলে আশা ব্যাক্ত করেছেন,ঐতিহ্যবাহী রাধানগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় একটি আধুনিক শিক্ষা ব্যাবস্থা গড়ে তুলতে তার আপ্রাণ প্রচেষ্ঠা থাকবে অব্যাহত।

 

রূপক আইচ, ২৫ সেপ্টেম্বর ১৬