কথা হচ্ছিল মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরে শনিবার সকালে বাজারে শাপলা বিক্রি করতে আসা রাব্বির (৯) সাথে। প্রচন্ড রোদের মধ্যে শাপলা বিক্রি করছে সে। শিশু রাব্বির কষ্ট দেখে কুড়ি মুঠো শাপলা কুড়ি টাকায় কিনে নেন সদরের আমিনুর রহমান কলেজের প্রভাষক সুতীব্র কুমার সাহা। রাব্বির বয়স বড় জোর দশ বছর। বাড়ি সদরের পোয়াইল গ্রামে। বাবা কাবুল শেখ দরিদ্র দিনমজুর। তিন ভাইয়ের মধ্যে রাব্বি দ্বিতীয়। মা জেসমিন খাতুন অন্যের বাড়িতে কাজ করেন।রাব্বি সদরের লাহুড়িয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। রাব্বি জানায়, দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকায় তার বাাবা শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করতে পাঠান। শাপলা বিক্রি করে তার ১৫ থেকে কুড়ি টাকা আয় হয়। এই টাকার কিছু বাবারকে দেয় বাকিটা তার কাছে থাকে।
টাকা দিয়ে কী করবে প্রশ্নের জবাবে রাব্বি জানায়, ‘কলম কাগজ লাগে। আব্বা কিনে দিতি চায়না। কয় স্কুল বন্ধ কাগজ কলমের কোন দরকার নাই।’ খিদে লাগলে জমানো টাকা দিয়ে কিছু কিনেও খায় রাব্বি।
রাব্বির বাবা কাবুল জমাদ্দার বলেন,’ গরিব মানুষ। জন বেচে খাই। কী করব ভাই। কডা টাকা আয় করতি পারলি উপকার হয়।’ রাব্বির মা জেসমিন খাতুন বলেন,’ আমি চাই আমার মনি লেহাপড়া করুক। স্কুল বন্দ বলে ওর আব্বা নাইল বেচতি পাঠায়।’ রাব্বির সব শাপলা কিনে নেওয়া সদরের আমিনুর রহমান কলেজের প্রভাষক সুতীব্র কুমার সাহা বলেন,’ শাপলাগুলো বিক্রি হচ্ছিল না। ছোট মুখটা রোদে পুড়ে কালো হয়ে ছিল। শাপলাগুলো কিনে কয়েকজন ভাগ করে নিয়েছি।’
রাব্বির স্কুল সদরের লাহুড়িয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান শরীফ বলেন,’ আমরা নানাভাবে চেষ্টা করছি। কিন্তু দারিদ্রতা প্রধান বাধা। রাব্বিদের পড়ালেখা ধরে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।