ওয়েব ডেস্ক
লন্ডনে তারেক রহমানের বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা খরচ, সংসার খরচ ও সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ মিলিয়ে মাসে কমপক্ষে ছয় হাজার পাউন্ড প্রয়োজন হয়।

দেশ থেকে লন্ডনে তারেকের কাছে পাঠানোর সিংহভাগ অর্থ যেত বিএনপি নেতাকর্মীদের মাদক ব্যবসা থেকে। বিশেষ করে টেকনাফের বিএনপির ইয়াবা গডফাদাররাই ছিল তারেকের অর্থের প্রধান যোগানদাতা।

কিন্তু সম্প্রতি দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান চালু হওয়াতে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কারবার প্রায় বন্ধ হয়ে আছে। ফলশ্রুতিতে অর্থনৈতিক ভাবে বিপাকে পরে যায় তারেক।

তারেক তার এই অর্থনৈতিক খরা কাটিয়ে উঠার জন্য প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন আসন্ন তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে। অনুসন্ধানে জানা গেছে আসন্ন তিন সিটি সিলেট, বরিশাল ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেতে হলে বিপুল অংকের টাকা লন্ডনে পাঠাতে হবে প্রার্থীদের।

আসন্ন তিন সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়ন পেতে হলে ১০ কোটি টাকা তারেক জিয়াকে দিতে হবে। এই তিন সিটিতে যারা নূন্যতম এই টাকা দিতে পারবেন, তারাই মেয়রপদে বিএনপির মনোনয়ন পাবেন। তারেক জিয়া লন্ডন থেকে এই বার্তা দিয়েছেন বলে দলের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

তারেক জিয়ার এই বার্তার পরপরই রাজশাহীর বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। বুলবুল তার ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, টাকার ব্যবস্থা হয়ে গেছে, লন্ডনে টাকা পৌঁছে যাবে। তারেক জিয়ার সঙ্গে বুলবুলের টেলিফোনে আলাপের পরপরই তার লোকজন নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে।

বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, তারেক জিয়ার প্রস্তাবে বুলবুল রাজি হলেও অন্য দুটি সিটি করপোরেশন বরিশাল এবং সিলেট মেয়ররা এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। বরিশালে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হাবিব কামাল এবং সিলেটে আরিফুল হক চৌধুরী দুজনই নির্বাচনের জন্য তারেককে টাকা দেওয়ার ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন।

তিন সিটিতেই অর্থের দিক দিয়ে বিএনপি নেতাদের থেকে জামায়াতের নেতারা এগিয়ে থাকাতে জামায়াতের প্রার্থীরা বিএনপির মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে পারে বলে শঙ্কায় ভুগছে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দলের নেতারা। এদিকে জামায়েতের কিছু সূত্রে জানা গেছে, তারেকের মনোনয়ন বাণিজ্যের সুযোগ নিয়ে তিন সিটির কমপক্ষে দুটিতে জামায়াতের প্রার্থীরা বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, এর আগে, গাজীপুর নির্বাচনে বর্তমান মেয়র অধ্যাপক আবদুল মান্নানের কাছে ২০ কোটি টাকা চেয়েছিলেন তারেক জিয়া। কিন্তু আব্দুল মান্নান ঐ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে, মান্নানের বদলে হাসান উদ্দিন সরকারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। খুলনাতেও মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়ন ৫ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছিল বলে জানা গেছে। এখন দেখার অপেক্ষা, ৩০ জুলাই অনুষ্ঠেয় তিন সিটি নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন কারা পায়।