বিশেষ প্রতিনিধি,মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
লালন মতাদর্শের অনুসারী হওয়ায় মাগুরা সদর উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের নূরু ইসলাম (৫০) নামে এক ব্যক্তির জানাজা পড়েনি স্থানীয়  মাওলানারা। নুরুর বাড়ি সদরের চাঁনপুর জোয়ার্দার পাড়ায়। কিডনী ও লিভারের অসুখে আক্রান্ত হয়ে সোমবার রাতে মাগুরা সদর হাসপাতালে মারা যান তিনি।
নূরুল ইসলামের শ্যালক কাজী আকিদুল ইসলাম জানান,  মঙ্গলবার সকালে  চাঁনপুর কবরস্থান সংলগ্ন হাফেজী মাসরাসা মাঠে তার জানাজা আয়োজন করা হয়।  কিন্তু এ জানাজা পড়াতে অস্বীকৃতি জানান ওই মাদরাসার হাফেজ তরীকুল ইসলামসহ স্থানীয় জোয়ার্দার পাড়া মসজিদের ইমাম ইউনুছ আলী। এ কারনে নূরুল ইসলামের ভাগ্নে হাফেজ হেমায়েত উদ্দিন মাগুরার মহম্মদপুর থেকে এসে দুপুরে তার জানাজা পড়ান।
এ বিষয়ে নূরুল ইসলামের বড় ছেলে হাসান জোয়ার্দারসহ গ্রামের অনেকের সাথে আলাপকালে পাওয়া গেছে নানা তথ্য। তারা জানান, নূরুল ইসলাম লালন অনুসারী। তিনি লালন মতে বিশ্বাসী ও নামাজ না পড়ার অভিযোগে তার নামাজে জানাজায় ইমামতি করা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেন চাঁনপুর ও আশে পাশের এলাকার বিভিন্ন মাদ্রাসা ও মসজিদের ইমামরা। যাদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় ধলহারা পূর্বপাড়া মসজিদের মোয়াজ্জেন মওলানা আতিয়ার রহমান, চাঁনপুর জোয়ার্দার পাড়া মসজিদের ইমাম ইউনুছ আলী, চানপুর গোরস্থান মাদরাসার ইমাম হাফেজ তরিকুল ইসলামসহ আরো অনেকে। তারা একতাবদ্ধ হয়ে চাঁনপুর গোরস্থান মাদরাসায় বৈঠক করে। নূরুল ইসলামের জানাজায় অংশ না নেবার সিদ্ধান্ত নেন। এ কারনে এলাকার কোন ইমাম তার জানাজা পড়ানো থেকে বিরত থাকেন। নূরুল ইসলামের ভাগ্নে হাফেজ হেমায়েত এ জানাজায় ইমামতি করেন। তার বাড়ি মহম্মদপুর উপজেলায়। এ বিষয়ে চাঁনপুর গোরস্থান মাদরাসার ইমাম মাওলানা তরিকুল ইসলাম বলেন, তার জানাজায় কেউ বাধা দেয় নি। তবে নূরুল ইসলাম অন্য মতাদর্শে বিশ্বাসী হওয়ায় ও অনেক আগেই ইসলাম ধর্মের পথ থেকে সরে আসায় তার জানাজা বয়কট করা হয়েছে। সে ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আমাদের সাথে বাদানুবাদ করেছে।
এদিকে নূরুল ইসলাম যে সংগঠনের সদস্য সেই সংগঠন মাগুরা সদরের দরিমাগুরা লালন সাধু সংঘর অন্যতম গুরু তিলাম হোসেন মাষ্টার বলেন, নূরুল ইসলাম দরি মাগুরা সাধু সংঘের সদস্য ছিলেন। ইসলাম ধর্মের সাথে আমাদের মতাদর্শেও কোন বিরোধ নেই। ইসলামে মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ জীব। আমরাও মানুষকে ভালবেসেই গানে গানে আমাদেও মতাদর্শ প্রচার করি। একারনে এটিকে ইসলাম বিরোধী বলে কেউ ব্যাখ্যা দিলে দঃখজনক।

মাগুরা /৩ অক্টোবর ১৭