রিপোর্টার, মাগুরাবার্তা
সাম্প্রতি ছাত্র অভ্যুত্থানে সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার, নিহত-আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং অভ্যুত্থান পরবর্তী হামলা, লুটপাট, চাঁদাবাজি, অগ্নিসংযোগ ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিতে মাগুরায় বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাংলাদেশ জাসদ মাগুরায় সমাবেশ করেছে।
দুপুরে মাগুরা প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে বাংলাদেশ জাসদ মাগুরা জেলার সভাপতি এটিএম মহব্বত আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট লীগ মাগুরার সাধারণ সম্পাদক শিক্ষাবিদ কাজী নজরুল ইসলাম ফিরোজ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ মাগুরা জেলা শাখার আহ্বায়ক প্রকৌশলী শম্পা বসু, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি মাগুরা জেলা শাখার সদস্য হিমাংশু দেব বর্মণ, বাংলাদেশ জাসদ মাগুরা জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাসারুল হায়দার বাচ্চুসহ অন্যরা।
সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার এক ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের ঘটনায় দেশের আপামর ছাত্র সমাজ ও জনসাধারণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগের পরপরই একটি মহল সারা দেশব্যাপী লুটতরাজ, চাঁদাবাজি, সাম্প্রাদায়িক সহিংসতা ও মানুষ হত্যার উৎসবে মেতেছে। যার তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন বক্তারা।
তারা বলেন, “বাংলাদেশ এক অভূতপূর্ব গণজাগরণ প্রত্যক্ষ করল। জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হল।” নেতৃবৃন্দ একই সাথে এই আন্দোলনে নিহত সকল ছাত্র-জনতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন “এই বীর শহিদেরা বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের সংগ্রামী চেতনায় চির ভাস্বর হয়ে থাকবেন।”
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ” অবিলম্বে এই হামলাকারী, লুটপাটকারী ও ভিন্ন মতালম্বী মানুষের উপর নির্মম হামলা-নির্যাতন বন্ধ করার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ। স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে কিন্তু স্বৈরাচারী ব্যবস্থা এখনও বহাল আছে। এই ব্যবস্থা উচ্ছেদ করে পুর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকার ও ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে জোরদার করার জন্য সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশ থেকে নিম্নলিখিত দাবি জানান হয়—
১| জুলাই-আগস্ট এ অভ্যুত্থানে সংগঠিত সকল হত্যাকান্ডের বিচার ও নিহতদের পরিবারকে যথাযথ পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং সকল নিহত ও আহতদের প্রকৃত তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
২| দেশের মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা, চাঁদাবাজী ও দখলদারিত্ব বন্ধ এবং দখল হওয়া স্থাপনা উদ্ধার, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে জড়িত স্থাপনা পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে।
৩| নিত্য পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়াসহ লুটপাট-দুর্নীতি বন্ধ, বিদেশে পাচারকৃত টাকা ফেরত আনা, খেলাপী ঋণ উদ্ধার, দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপী, অর্থপাচারকারীদের গ্রেপ্তার, বিচার ও তাদের স্থাবর অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে।
৪| দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে দলীয়করণ মুক্ত করে অবিলম্বে এ সব প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে এবং স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে।