বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরায় শিল্পকলা একাডেমীর পক্ষ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকার দুঃস্থ শিল্পীদের অনুদান বিতরণে দূর্ণীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে এখন মুখ খুলছেন অনেকেই। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটিকে পাশ কাটিয়ে সকল কার্যক্রম পরিচালনায় এখানে একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন। এ সিন্ডিকেটটি শিল্পকলার নিয়মিত সভার পরিবর্তে নিজেদের মত করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন ও জেলা প্রশাসককে ভুল বুঝিয়ে সেই সিদ্ধান্ত শিল্পীদের উপর চাপিয়ে দেন। জেলা প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে এ সিন্ডিকেটের সদস্যরা বিভিন্ন দফতর থেকে নানা অনৈতিক সুযোগ সুবিধাও নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক শিল্পী ও শিল্প সংশ্লিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ। শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার জসিম উদ্দিন, সহ-সম্পাদক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, সাউন্ড অপারেটর কামরুজ্জামান ও সংগীত শিক্ষক অজিত রায় এর এ চক্রটি দু একজন শিল্পী ও সংগীত শিক্ষককে ম্যানেজ করে ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মাগুরার প্রথিতযশা সংগীত শিল্পী ও স্কুল শিক্ষক শিপ্রা দাস জানান- ‘কয়েকদিন আগে মাগুরার একটি ব্যাংকে নিজের ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে দেখি লম্বা লাইন। সবার হাতেই একটি করে ১০ হাজার টাকার চেক। জিজ্ঞাস করতেই অবাক বিস্ময়ে জানতে পারলাম এরা সবাই শিল্পী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর প্রনোদনা পেয়েছেন। মাগুরায় এই বিশাল শিল্পী সমাজের কাউকেই আমি শিল্পী হিসেবে চিনতে পারলাম না। এমনকি এরা শিল্পাকলা শব্দটিও সঠিকভাবে উচ্চারণ করতে পারছেন না। অথচ আমার জানামতে অনেক শিল্পীই রয়েছেন যারা করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে অনাহারে অর্ধাহারে আছেন।’ শিল্পীদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এত সুন্দর চিন্তাকে যারা নষ্ট করতে চায় তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি।
জেলা শিল্পকলা একাডেমীর পরিচালনা পরিষদের সহ-সভাপতি ও মাগুরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ খান জানান – মাগুরা জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে তিনি সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। অথচ শিল্পকলার কোন কার্যক্রমেই তাদেরকে ডাকা হয় না। একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের মত করে এখানে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। শিল্পকলা একাডেমীর সঙ্গে জড়িতদের এ ধরনের তালিকা যাচাই বাছাইয়ে কখনেই ডাকা হয় না। ফলে এই তালিকা তৈরীতে তারা কোন ভূমিকা রাখতে পারিনি । এমনকি তালিকা তৈরীর আগে তারা ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন দুঃস্থ শিল্পীদের নামের তালিকা শিল্পকলা একাডেমীতে দিলেও ওই সিন্ডিকেট সে তালিকাও অগ্রাহ্য করে নিজেদের মত করে ব্যক্তিগত পছন্দের মানুষদের নামের তালিকা তৈরী করেছে। ফলে প্রকৃত শিল্পীদের তুলনায় অশিল্পীর নামই বেশী এসেছে। এমনকি সরকারের বিরোধী মনোভাব ও সরাসরি জামাত শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্ঠ ব্যক্তিও ব্যক্তিগত সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে কৌশলে বিভিন্ন সংগঠনের নামে এ তালিকায় ঢুকে পড়েছে। যা সত্যিই দুঃখজনক।
মাগুরা/ ১৫ এপ্রিল ২০২১