বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরার শ্রীপুরে শ্বশুরবাড়ির লোকদের চেতনানাশক খাওয়ানোর অভিযোগ  জামাইকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, শ্বশুরবাড়ি থেকে কোন জমিজমা না পেয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন জামাই আক্তার হোসেন পরিকল্পনা করেন তাদের শায়েস্তা করার। আর এ কারণে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে সবাইকে নিজে হাতে মিষ্টির সাথে বিষাক্ত চেতনানাশক খাওয়ান। কিছুক্ষণের মধ্যেই চেতনা হারান বাড়ির ৫ সদস্য। পরে প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও এখনো তাদের চেতনা ফেরেনি।

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্রীপুর উপজেলা সদরের শ্রীপুর গ্রামে।  আজ  শনিবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় অভিযুক্ত জামাই আক্তার হোসেনকে শ্রীপুর থানা পুলিশ আটক করেছে।

আটক আক্তার হোসেন উপজেলার কাজলী গ্রামের মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে।

 শ্রীপুর থানার ওসি (তদন্ত) লিটন কুমার সরকার বলেন, এ বিষয়ে মামলা নেওয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত আক্তার হোসেন বিষ খাওয়নোর কথা স্বীকার করেননি।

আক্তার হোসেনের শাশুড়ি ফাতেমা বেগম  জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় জামাই আক্তার হোসেন মিষ্টি নিয়ে তার বাড়িতে আসেন। এ সময় জামাইয়ের কাছে লেবু ও আখের গুড় ছিলো। এরপর আক্তার হোসেন নিজে হাতে আখের গুড়ের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে শ্যালক ও তাদের স্ত্রীদের শরবত বানিয়ে খাওয়ান। এ সময় সেখানে থাকা দুই শিশুও সেই শরবত পান করে। শুধু তিনি ও তার এক এক ছেলে সেই শরবত ও মিষ্টি খাননি।

শরবত খাওয়ানোর কিছুক্ষনের মধ্যেই দুই শিশুসহ মোট ৫ জন অচেতন হয়ে পড়েন। এ সময় প্রতবেশিরা তাদের উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। পরে তাদের অবস্থার আরো অবনতি হলে তাদেরকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে সেখানে আক্তার হোসেনের শ্যালক খসরু মোল্ল্যা(৩৫), তার ছেলে আরাফাত(৭), শ্যালক কবীর মোল্ল্যা ও মিজান মোল্ল্যার স্ত্রী শেফালী বেগম(২৮) ও নাছরিন বেগম (২৬), ভাইরা আব্দুর রহিমের মেয়ে সুমাইয়া(৫) চিকিৎসাধীন রয়েছে।

অভিযুক্ত আক্তার হোসেনের শ্বাশুড়ি ফাতেমা বেগম দাবি, শ্বশুরের সম্পতি না পেয়ে জামাই এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ফাতেমা বেগমের প্রতিবেশী কলেজ শিক্ষক ফারজানা আক্তার বন্যা বলেন, শরবত পান করার পর মূহুর্তের মধ্যেই একেবারে সিনেমার দৃশ্যের মত সকলে একে একে চেতনা হারিয়ে পড়ে যান। তিনিই সকলকে হাসপাতালে পাঠনোর ব্যবস্থা করেন।

উল্লেখ্য, মৃত্যুর পূর্বে আক্তার হোসেনের শ্বশুর শ্রীপুর গ্রামের আবুল মোল্ল্যা তার সম্পতির কোন অংশ মেয়েদের না দিয়ে সব কিছু ছেলেদের নামে লিখে দেন। আর এতে ক্ষুব্ধ হন তার বড় জামাই আক্তার হোসেন।

অভিযুক্ত আক্তার হোসেনের এক শ্যালক কবীর হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কারো চেতনা ফেরেনি।

মাগুরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক   ডা.অমর প্রসাদ বিশ্বাস বলেন, চিকিৎসাধীন পাঁচজনেরই জ্ঞান ফেরেনি। তারা কেউই আশঙ্কামুক্ত নয়।

রূপক/মাগুরা/ ১০ অক্টোবর ২০২০