স্টাফ রিপোর্টার, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
জেলা প্রশাসকের আকস্মিক পরিদর্শনে মাগুরা পৌর ভূমি অফিসে ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৬৪৪ টাকা আত্মসাতের দুর্নীতির তথ্য উঠে এসছে। এ সময় ওই অফিসের ২ শতাধিক আটকে রাখা ফাইল উদ্ধার হয়েছে।

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মাগুরা জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তাদের নিয়ে মাগুরা ভূমি অফিসে আকস্মিক এ পরিদর্শনে যান। এসময় পৌর ভূমি অফিসের সহকারি ভূমি কর্মকর্তা উজ্জল মিয়ার টেবিলে পাওয়া যায় ২ শতাধিক ফাইল। পাশাপাশি গত কয়েকদিনের নিরীক্ষায় ধরা পড়ে ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৬৪৪ টাকা আত্মসাতের তথ্য প্রমান।

জেলা প্রশাসক সূত্রে জানা গেছে, ভূমি অফিসে সেবা নিতে গিয়ে দূর্ভোগের শিকার কিছু নাগরিকের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩ মে মাগুরা জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমান মাগুরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুন্নাহার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)  মৌসুমী জেরিন কান্তাকে সাথে নিয়ে পৌর ভূমি অফিস পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনকালে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়, বিবিধি আদায়, নামজারি মামলাসহ বিভিন্ন রেজিস্ট্রার পর্যালোচনা করে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ইতমধ্যেই পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা উজ্জল মিয়াকে মাগুরা সদর উপজেলা ভূমি অফিস থেকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’ করে তৎক্ষণাৎ শ্রীপুর উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। তবে, তাকে বদলির পর অফিস পরিদর্শনে বেরিয়ে এসেছে তার বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ।
জেলা প্রশাসনের তদন্তে দেখা গেছে গত যে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩০ এপ্রিল ২০১৮ পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর আদায় ২৯,৬৪,৫৪৬ টাকা দেখানো হলেও আদায়কৃত ভূমি উন্নয়ন করের মধ্যে মাত্র ১৬,৪২,৬৪৮ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে। বাকি ১২,৩৩,৬৪৪ টাকার কোন হদিস নেই।
উজ্জল মিয়া মাগুরা পৌর ভূমি অফিসে সহকারি ভূমি কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত থাকা অবস্থায় এসব ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের রশিদ দিয়ে কর আদায়ের ক্ষেত্রেও নানা ধরনের কারচুপির আশ্রয় নিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।
তদন্তে দেখা যায় উজ্জল মিয়া ইসলামপুরপাড়া মরহুম হাবিবুর রহমান এবং মরহুম হাবিবুর রহমানের স্ত্রী মরহুমা উম্মে সালমার ওয়ারিশ আহসান হাবিব, আসলাম হাবিব, নুসরাত হাবিবের কাছ থেকে মাগুরা কলেজপাড়ার ৪৬ শতক জমি (খতিয়ান নং ১৭৯২ ও দাগ নং ৪৫৯/৬০) এবং তাদের পারনান্দুয়ালি এলাকার জমির ভূমি উন্নয়ন কর বাবাদ রশিদের মাধ্যমে ১,৫৪,০০০ টাকা আদায় করলেও জমা করেছে মাত্র ৭০ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুন্নাহার অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভূমি সম্পর্কিত সেবা গ্রহণেচ্ছুদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উজ্জল মিয়াকে তৎক্ষণাৎ শ্রীপুর উপজেলায় বদলি করার পর জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে পরিদর্শন শেষে তার নির্দেশে সেখানে চলমান অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে  উজ্জল মিয়া অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান- সাধারণত মাসিক রিপোর্ট পাঠানোর সময় ভূমি অফিসগুলিতে অধিক আদায় দেখানোর রেওয়াজ আছে। সেই হিসেবে বেশী আদায় দেখানো হয়েছে। যা বছর শেষে সমন্বয় করা হয়। সরকারি কোন টাকাই আত্মসাত করা হয়নি।

রূপক/ মাগুরা/২০ মে ১৮

একটি মানবিক আবেদন:  মৃত্যুর দূয়ার থেকে ফিরে আসুক প্রিয় শিল্পী বাবুল

http://magurabarta24.com/15285-2/