ওয়েব ডেস্ক, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
মাগুরা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামালকে জেলে পাঠিয়েছে ঢাকার একটি আদালত। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে তিনিও ওই মামলায় জামিনে ছিলেন। একই সঙ্গে  আদালতে হাজির না হওয়া ও মামলা বিলম্বিত করায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ওই মামলায় ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের জামিন বাতিল করে  কারাগারে পাঠিয়েছেন। খবর বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম।

আগামী ১৯ অক্টোবর এ মামলায় যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন ও একইদিন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অবশিষ্ট সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামানের আদালত এসব আদেশ দেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ওই দুই দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত এ আদালতে।

সকালে চিকিৎসার জন্য বিদেশে থাকার কথা বলে অরফানেজ মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়ার ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন পেছাতে ফের সময়ের আবেদন জানান তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া। অন্যদিকে জামিন বাতিল করে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানান দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল।

আদালত আসামিপক্ষের আবেদন নামঞ্জুর করে খালেদার জামিনের পাশাপাশি আত্মপক্ষ সমর্থনও বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। একইসঙ্গে আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষ্য বাতিল করে আগামী ১৯ অক্টোবর মামলার সর্বশেষ ধাপ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন।

মামলাটির অন্য দুই আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল  কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ ১২ অক্টোবর পর্যন্ত অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। তারা জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানালে তা নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

এরপর চ্যারিটেবল মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ‍নুর আহমেদকে আসামিপক্ষের পুন:জেরাসহ অবশিষ্ট সাক্ষ্যগ্রহণ একইদিন ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতবি করেন আদালত।

চ্যারিটেবলে গত বছরের ০১ ডিসেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করতে শুরু করেন খালেদা। কিন্তু ওইদিন বক্তব্য শেষ না হওয়ায় সময় চান তিনি। এরপর কয়েক দফায় আদালতে না গিয়ে সময় বাড়িয়ে নেন। অন্যদিকে উচ্চ আদালতে নানা আবেদন ও অসুস্থতার কথা বলে বেশ কয়েকবারবিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

পিছিয়ে নিয়েছিলেন অরফানেজে আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন।

চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন। অন্য দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

অন্যদিকে অরফানেজ মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য পাঁচ আসামি হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বিদেশে থাকা তারেক রহমানকেও পলাতক দেখিয়ে মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে।

এ মামলায়ও সাক্ষ্য দিয়েছেন ৩২ জন সাক্ষী। অন্য দুই আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন।

২০১০ সালের ০৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করে দুদক।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে এ মামলা দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে ২০০৮ সালের ০৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এ মামলা দায়ের করা হয়।

রূপক/মাগুরা/ ১২ অক্টোবর ১৭