বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরায় বাড়ি জবরদখলকারী সদরের হাজীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম আখরোটের দখল থেকে বাড়ি উদ্ধারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী দুই বোন। গতকাল শনিবার(২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মাগুরা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে উর্মি শায়লা মনিরা নামে এক নারী অভিযোগ করে জানান, তার পিতার রেখে যাওয়া মাগুরা শহরের হরিশদত্ত রোডে অবস্থিত ৮.২০ শতাংশ জমিসহ বাড়ির কর ফাঁকি দিয়ে কৌশলে মাজহারুল ইসলাম আখরোট চেয়ারম্যান খাস জমিতে পরিণত করে ফেলে। পরবর্তীতে মাজহারুল ইসলাম আখরোট চেয়ারম্যান ও তার গডফাদার বর্তমানে পলাতক সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখরের অবৈধ ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে উক্ত জমি দখল করে বসবাস করতে থাকেন। তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, আমি ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আমার পৈতৃক জমি ভাগ-বাটোয়ারা করার জন্য স্থানীয় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করি। তখন তাদের কাছ থেকে কোন সাড়া না পেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক আশরাফুল আলম আমাদেরকে নিয়ে মোট চারবার শুনানী করেন। তখন আমরা জানতে পারি, মাগুরা শহরের হরিশদত্ত রোডে অবস্থিত চার তলা বাড়িটি আমার বাবার নিজ নামীয় সম্পত্তি। কিন্তু দীর্ঘদিন আখরোট চেয়ারম্যান ক্ষমতার জোরে দখল করে রেখেছে। তিনি বলেন, এক পর্যায়ে সকল বৈধ জমির কাগজপত্র দিয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট জমির মালিকানা দাবি করে আবেদন করলে জেলা প্রশাসক বিভিন্নভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেটা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় পাঠায়। ৩১ জুন ২০২৩ তারিখে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অবৈধ দখলদার, দুর্নীতিবাজ আখরোট চেয়ারম্যানের এই অনৈতিক কাজের জন্য বহিষ্কারের আদেশ দেয়। ৬ আগস্ট ২০২৩ তারিখে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধান ১২৮০ স্মারকের একটি চিঠিতে প্রকৃত বাড়ির মালিক হিসেবে বাড়িতে আমাকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেন। জেলা প্রশাসক বাড়িটি বুঝিয়ে দিতে গড়িমসি শুরু করেন। আমি বাড়িটি বুঝিয়ে নিতে মাগুরায় আসলে ১৬ আগস্ট ২০২৩ আখরোট চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি সাইফুজ্জামান শিখরের নির্দেশে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী আমার উপরে হামলা চালায় এবং আমার কাছে থাকা জমির মূল কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। এই ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এরপর আমি কাগজপত্র নিয়ে আবারো জেলা প্রশাসকের নিকট দেখা করতে গেলে এসময়ের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ আমার সাথে দেখা করেননি। ৬ আগস্ট ২০২৪ তারিখে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে আমাকে ফোন দিয়ে বলা হয়, দশ দিনের মধ্যে আপনার বাড়িটি বুঝে নিতে হবে এবং তিন লক্ষ টাকা দিতে হবে। তিনি বলেন, ২০২৩ সালের জুন মাসে কুখ্যাত দুর্নীতিবাজ,জবরদখলকারী আখরোট চেয়ারম্যান ও তার গডফাদার সাইফুজ্জামান শিখরের সন্ত্রাসীরা আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেয় এবং এক পর্যায়ে আমার মাকে রুমে আটকিয়ে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। পুলিশের সহায়তায় আমি আমার মাকে উদ্ধার করি। এরপর আমাকে মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর আমাকে ন্যাম ভবনে ডেকে নিয়ে নানা ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে জমির বিষয়ে আর সামনে না আগানোর কথা বলেন। এ অবস্থায় তিনি প্রশাসনের কাছে নিজের সম্পত্তির অধিকার বুঝে পেতে আবেদন জানান।