রূপক আইচ, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
সামাজিক ব্যাধী বাল্য বিবাহ বন্ধে সরকারি-বেসরকারিভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ্ নেয়া হচ্ছে। খরচ করা হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। কিন্তু সম্পূর্ণ ব্যক্তিগতভাবে বগুড়ার আনোয়ার হোসেন তালুকদার নিয়েছেন  ব্যতিক্রমধর্মী এক উদ্যোগ। বাল্যবিবাহ রোধের বিভিন্ন আহবান নিয়ে সাইকেলে চেপে দেশের ৬৪জেলা পরিভ্রমণ শেষে এখন প্রতিটি উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে প্রচার চালাচ্ছেন তিনি।  aaaa

লাল রং এর গেঞ্জি, লাল টুপি, লাল সাইকেল, লাল চসমা, লাল বাঁশি, লাল ব্যাগ, হাতে লাল হ্যান্ড মাইক নিয়ে ঘুরছেন পঞ্চাশোর্ধ আনোয়ার। যেন লাল রং দিয়ে বাল্যবিবাহের বিপদকেই জানান দিচ্ছেন সবার মাঝে। সাইকেলের সামনে পিছনে লাল সাইন বোর্ডে লেখা রয়েছে তার যাত্রার উদ্দেশ্য। রাস্তায় কোথাও দাঁড়ালেই লোকজনকে বলছেন বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে।aaaaaaaaa

২০১৫ সালের জানুয়ারীর ১৫ তারিখ থেকে মার্চের ২০ তারিখ পর্যন্ত ৬৭দিনে ঘুরেছেন ৬৪ জেলা।  গত ১৭ অক্টোবর থেকে দেশের প্রতিটি উপজেলা ঘুরে প্রচার চালানোর জন্য শুরু করেছেন আবার সাইকেল যাত্রা। প্রতিটি উপজেলার যাত্রাপথের বিভিন্ন স্কুলে লিফলেট বিতরণ করেন বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে। তার ব্যাতিক্রমী উপস্থাপনা মনযোগ দিয়ে শোনে স্কুলের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা।

মাগুরা সদরের নান্দুয়ালী ডিইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী নাসরিন খাতুন মাগুরাবার্তাকে  জানান- স্কুলে এসে আনোয়ার হোসেনের বন্ধুর মত মিশে তাদের সাথে গল্পের ছলে বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে জানান। এ সবকিছুতেই তারা খুবই অনুপ্রাণিত হয়েছে। তাদের স্কুলে মাঝে মধ্যেই মেয়েদের বাল্য বিয়ে হয়ে যায়। ভবিষ্যতে যেন এ ধরণের বিয়ে না হয়। এ জন্যে তারা সবাই সোচ্চার হবে।aaaaa

ওই স্কুলের শিক্ষিকা মৌলুদা খানম মেরী মাগুরাবার্তাকে  জানান- আনোয়ার হোসেন যেমন তার কাজকর্ম ফেলে বাল্য বিয়ের মত সামাজিক ব্যাধি দূর করতে সারাদেশ চষে বেড়াচ্ছেন। তেমনি আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত নিজ নিজ এলাকায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা। সামাজিক ও পরিবারিকভাবে সচেতন না হলে বাল্য বিয়ে বন্ধ করা সম্ভব না। প্রতি গ্রামে একজন করে আনোয়ার হোসেন প্রয়োজন।

মাগুরা সদর, শ্রীপুর, মহম্মদপুর ও শালিখা উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে প্রচারণা শেষে আনোয়ার হোসেন সোমবার রওনা হন পার্শ্ববর্তি যশোরের উদ্দেশ্যে। সম্পূর্ণ  ব্যক্তি উদ্যোগে তাঁর এ প্রচারাভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন সকলে।

aaaaaaa

আনোয়ার হোসেন মাগুরাবার্তাকে  জানান- শিউলি ও মনো নামে তার অত্যন্ত প্রিয় দুই ভাগ্নির মাত্র ১৪ বছর বয়সের সময় বিয়ে হয় । বিয়ের মাত্র ১০ বছর কাটতে না কাটতেই ওই দুই বোনই স্বামী পরিত্যাক্তা হয়ে বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন সন্তানসহ। তাদের জীবনে বাল্য বিবাহের করুন পরিণতি দেখেই  আনোয়ার হোসেন সিদ্ধান্ত নেন সারাদেশের মানুষকে বাল্য বিয়ের হাত থেকে মুক্ত করতে দেশব্যাপী স্কুলগুলিতে প্রচার চালানোর। এ সময় তিনি বাল্য বিয়ের খারাপ দিকগুলি তুলে ধরে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে প্রচারণা চালান।

মাগুরাবার্তা/ ১৪ নভেম্বর ১৬