বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

মাগুরা শহরতলির বরুনাতৈল এলাকার আতিয়ার রহমান (৫০)। পেশা হিসেবে নির্দিষ্ট কিছুই নেই। তবু সংসার চলছে বহাল তবিয়তে। মূলত মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিতে ফেলে টাকা আদায় করাই তার প্রধান পেশা। তার হাতে হয়রানির শিকার একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য।

জানা গেছে- প্রায় ৩০ বছর আগে মহম্মদপুরের ধুপুরিয়া এলাকা থেকে নিজের জামিজমা বিক্রি করে মাগুরা শহরের পার্শ্ববর্তী পশ্চিম বরুনাতৈল এলাকায় বাড়ি করে আতিয়ার রহমান। এখানে এসে কখনো ভ্যান চালিয়ে, কখনো ছোটখাটো ব্যবসা করে সংসার চালাতো সে। সম্প্রতি লোভী আতিয়ার রহমান তার বাবার পৈত্রিক বাড়ির এলাকার জমি পাওয়ার কথা বলে ওই এলাকার সাধারণ মানুষের নামে একের পর এক দেওয়ানী মামলা দায়ের করতে থাকে। সেই সাথে  একের পর এক অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে সে ওই এলাকার মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের   টাকা হাতিয়ে নেয়। এসব মামলায়  সে সাধারণত নিরীহ প্রকৃতির মানুষদের জড়ায়। সে যেহেতু মাগুরা শহরের পাশেই থাকে এবং অসামাজিক লোকজনকে টাকা পয়সা দিয়ে মহম্মদপুর থেকে আসা ওইসব সাধারণ লোককে কোর্টের আশপাশে ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে। এ অবস্থায় এক সময় বাধ্য হয়েই তাকে টাকা পয়সা দিয়ে তারা মামলা নিস্পত্তি করতে বাধ্য হয়।

ভূক্তভোগী মহম্মদপুরের হামু বিশ্বাস, সাজ্জাদ বিশ্বাস, মো: মোস্তফা , নান্নু মো্ল্যাসহ একাধিক ব্যক্তি এসব তথ্য জানান।

ভূক্তভোগী মহম্মদপুরের ধুপুুরিয়া গ্রামের  নান্নু মোল্যা মাগুরাবার্তাকে বলেন- আতিয়ার রহমান সম্প্রতি আমার ও আমার প্রতিবেশীদের নামে একটি জমিজমা সংক্রান্ত দেওয়ানী মামলা করে। ওই মামলার মিমাংসার জন্য সে আমার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। আমি যেহেতু বৈধ উপায়ে বৈধ্য জমি কিনেছি। সেই কারণে আমি তার প্রস্তাবে রাজী হইনি।   এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার নামে মাগুরা জজ কোর্টে একটি মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় ২বারের তদন্ত প্রতিবেদনে মামলাটি ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় আইও মামলাটি ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দেয়। এ অবস্থায় সে আবারো নারাজি দিয়ে মামলাটি চালু করে। ২৪ সেপ্টেম্বর ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তার কাছে শুনানির দিন ছিল। এর আগে আতিয়ার রহমান আমাকে ফোন করে আমার কাছে টাকাপয়সার মাধ্যমে বিবাদ মিমাংসার আহবান জানায়। (যার ফোন অডিও রেকর্ড আমার কাছে আছে।)  কিন্তু আমি তাতে রাজী হইনি।  আজ সন্ধ্যায় মামলার ওই তদন্তকারি কর্মকর্তার কাছে জবানবন্দী দেয়ার পর বাড়ি ফেরার পথে আতিয়ার ও তার আত্মিয় স্বজন আমাকে নোমানী ময়দানের গেটের কাছে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও আবারও মিথ্যা মামলা করার হুমকি ধমকি দেয়।  এ বিষয়ে আমি মাগুরা সদর থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করি।

তিনি মিথ্যা মামলাবাজ আতিয়ারের উপযুক্ত বিচার দাবী করেন।

তিনি জানান- আতিয়ার রহমান এমনই নৃশংস মানুষ যে, টাকার লোভে নিজের বাবাকে পর্যন্ত কুপিয়ে যখম করেছিল।  আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে সে আমাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে চায়। এভাবে টাকা আদায় করাই  এখন তার পেশা।

এ ব্যাপারে মাগুরার সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার সার্কেল সুদর্শণ কুমার রায় মাগুরাবার্তাকে  জানান- মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করে মানুষকে হয়রানি করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। এ ধরণের অপরাধের সাথে জড়িতে হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

রূপক আইচ, ২৫ সেপ্টেম্বর ১৬