Main Menu

মাগুরায় বিনা’র ভার্মি কম্পোস্ট বিষয়ক কৃষক কর্মশালা

Magura Varmi Compost Training Pic

বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরায় ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সারের উৎপাদন বৃদ্ধিতে উদ্যোক্তা তৈরী বিষয়ে উদ্যোক্তা ও কৃষক প্রশিক্ষণ দিয়েছে পরমানু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট (বিনা)। বিনা মাগুরা উপকেন্দ্রের মিলনায়তনে ৪০জন কৃষক ও উদ্যোক্তা নিয়ে রবিবার দিনব্যাপী উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আসাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন বিনা ময়মনসিংহের মহা পরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিনার পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. আব্দুল মালেকসহ অন্যরা। প্রশিক্ষণে প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিনার ভার্মি কম্পোস্ট বিভাগের প্রধান গবেষক ও মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. মো. আজিজুল হক। তিনি জানান, কেঁচো ভূমির অন্ত্র এবং পৃথিবীর বুকে উর্বর মাটি তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে, যার ওপর আমরা ফসল উৎপাদন করি। এ অতি সাধারণ, ক্ষুদ্র প্রাণীটি পচনশীল জৈবপদার্থ থেকে সোনা ফলাতে পারে, কেঁচোসার বা ভার্মিকম্পোস্টে রূপান্তরিত করে। আহার পর্বের পর যে পাচ্য পদার্থ মলরূপে নির্গমন হয় তাকে কাস্ট বলে। এ কাস্টের ভেতর জীবাণু সংখ্যা এবং তার কার্যকলাপ বাড়ার কারণে মাটির উর্বরতা বাড়ে। দেখা গেছে, পারিপার্শ্বিক মাটির তুলনায় কাস্টের মধ্যে জীবাণু সংখ্যা প্রায় হাজার গুণ বেশি। এ কাস্টের ওপরে বিভিন্ন প্রকার উৎসেচক উৎপাদনকারী ব্যাক্টেরিয়া জীবাণু বেশি থাকায় মাটির উর্বরতাও বাড়ে। কাস্টের কারণে মাটি থেকে গাছে ৬ শতাংশ নাইট্রোজেন এবং ১৫-৩০ শতাংশ ফসফরাস যোগ হতে দেখা গেছে। এছাড়াও অন্যান্য উদ্ভিদ খাদ্য উপাদান ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম গাছ বেশি পরিমাণে গ্রহণ করতে পারে। কেঁচোর উপস্থিতিতে জৈবপদার্থের কার্বন ও নাইট্রোজেন অনুপাত প্রায় ২০:১ এর কাছাকাছি হয়। এ অনুপাতে গাছ সহজেই কম্পোস্ট থেকে খাদ্য গ্রহণ করতে পারে। ভার্মিকম্পোস্ট সব প্রকার ফসলে যে কোনো সময়ে ব্যবহার করা যায়। সবজি এবং কৃষি জমিতে ৩-৪ মেট্রিক টন প্রতি হেক্টরে ও ফল গাছে গাছ প্রতি ৫-১০ কেজি হারে ব্যবহার করা হয়। ফুল বাগানের ক্ষেত্রে ব্যবহারের পরিমাণ ৫০০ থেকে সাড়ে ৭০০ কেজি এক হেক্টর জমিতে। মাঠ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, কেঁচো সার ব্যবহারে মাঠ ফসলে ফলন শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। সবজিতে ফলন বৃদ্ধিসহ গুণগতমান ও স্বাদ বাড়ে। এমনকি ফল না ধরা অনেক পুরনো ফল গাছে নতুন করে ফল ধরাসহ ফলদ বৃক্ষে দুইগুণ অবধি ফলন বেড়েছে। জমির স্বাস্থ্য ও উর্বরতা বজায় রাখার জন্য জৈব সার ব্যবহারের প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন এ ব্যাপারে। তাই ভার্মিকম্পোস্ট উৎপাদন ও তার ব্যবহার এক মূল্যবান ভূমিকা পালন করতে চলেছে। ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহারের ফলে দেশে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।

রূপক / মাগুরা / ১৯ মার্চ ২৩






Comments are Closed