বিশেষ প্রতিনিধি,মাগুরাবার্তা
সার ও কীটনাশকের দোকানে নকল কীটনাশক রাখার দায়ে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার মাটিকাটা বাজারে বুধবার বিকেলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে মেসার্স খাঁন ট্রেডার্স নামক দোকােন মালিক আসগর আলী খানকে একলক্ষ টাকা জরিমানা ও ৬ মাসের জেল দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত । এই সময় উক্ত ডিলারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নকল কীটনাশকের কারখানা পাওয়া যায়। দোকান ও কারখানা সীলগালা করে কীটনাশকের লাইসেন্স জব্দ করা হয়। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শ্যামানন্দ কুন্ডু। এ সময় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রূপালী খাতুন ও শ্রীপুর থানা পুলিশ সঙ্গে ছিলেন ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা বলেন, ঘাসিয়াড়া ও কমলাপুর মাঠে নকল ঔষধ প্রয়োগে পেঁয়াজ নষ্টের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন চাষিরা। পরে মেসার্স খান ট্রেডার্সে অভিযান চালিয়ে জিংক এবং এন্টাকল ল্যাব টেষ্টে পাঠানো হয়। কিন্তু জিংকের ল্যাব টেষ্ট যেখানে ৩৬ থাকার কথা সেখানে ৩.৬ এসেছে। এরই পরিস্থিতিতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রুপালী খাতুন জানান, মাটিকাটা গ্রামের একটি বাড়িতে মিনি নকল জিংক তৈরীর কারখানায় নকল জিংক ও কীটনাশক প্যাকেজিং করে তা বিপণন করা হয়। এমন সংবাদের ভিত্তিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা কমিশনার (ভূমি) শ্যামানন্দ কুন্ডুর নেতৃত্বে বুধবার বিকেলে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠন করে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনার সময় শ্রীপুর থানার পুলিশ ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন নিম্নমানের জিংক সার প্যাকেটে প্যাকেজিং করা হচ্ছে। একইভাবে কীটনাশকের বোতল পরিবর্তন করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির নামে প্যাকেজিং ও লেভেল লাগিয়ে বাজারজাত করা হয়। সেখান থেকে মেয়াদোত্তীর্ন কিটনাশক, খান জিংক, বিভিন্ন কোম্পানির স্টিকার, লেভেল ও ক্যামিক্যাল জব্দ করা হয়। অভিযানকালে কারখানা আজগর আলী খানকে হাতেনাতে ধরা হয়। এসময় আদালত তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন, ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং কারখানা ও দোকান সিলগালা করার রায় দেওয়া হয়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শ্যামানন্দ কুন্ডু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আজগর আলী নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার বাড়িতে নকল কারখানা ও দোকান সিলগালা করা হয়েছে। এবং বিপুল সংখ্যক খালি নতুন প্যাকেট, লেভেল ও কিটনাশক জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত কিছু কীটনাশক ধ্বংস এবং আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে ।
উল্লেখ্য, চলতি মৌসুমে এই দোকানের কীটনাশক ব্যবহার করে উপজেলার কমলাপুর ও ঘাসিয়াড়া মাঠের অন্তত ১০ জন কৃষকের প্রায় ৭ একর জমির পেঁয়াজ একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। ডিলারের শাস্তির সংবাদে কৃষকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে ।