বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
৪র্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার দারিয়াপুর ইউনিয়নে ভূয়া দলীয় পদ দেখিয়ে গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী নিকট আত্মিয় আব্দুস সবুরকে নৌকার মনোনয়ন দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দলের সাথে কোন সম্পর্কহীন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়ায় মনোনয়ন বঞ্চিত আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস মার্কার মিয়া মাহমুদুল গণি শাহিনের ভগ্নিপতি আব্দুস সবুর দীর্ঘ ২০ বছর জাপানে প্রবাস জীবন কাটিয়ে গত উপজেলা নির্বাচনের আগে দেশে ফেরেন। এ সময় তিনি নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেন।

এদিকে আব্দুস সবুর নিজেকে দারিয়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করলেও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের দাবি, তিনি আওয়ামী লীগে কখনো কোন পদেই ছিলেন না, এখনো নাই। বরং ভূয়া পরিচয় দিয়ে অবৈধ পন্থায় নিয়েছেন দলীয় মনোনয়ন। বছরের পর বছর প্রবাস থেকে তিনি নিজ এলাকায় মানুষের কাছে নিতান্তই বসন্তের কোকিল হিসেবে পরিচিত ।

এ বিষয়ে দারিয়াপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলেক শেখ বলেন, আব্দুস সবুর প্রায় ২০ বছর বিদেশ থেকে এসেছেন। তার সঙ্গে এলাকার মানুষের কোন সম্পর্কই নেই। বিতর্কিত কমিটি দেয়া ছাড়া রাজনীতির সাথে তাঁর তেমন কোন সম্পৃক্ততা নেই।

দারিয়াপুর ইউনিয়নের প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা শফি উদ্দিন মোল্লা বলেন, যারা দলের জন্য কাজ করে, রাজপথে থাকে। দলে সেই ত্যাগীদের কোন মূল্যায়ন নাই। তিনি অনেক বছর আগে অনুমোদনহীন বিতর্কিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। তবে সে কমিটি বেশিদিন টেকেনি।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শিহাবুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘ ২০ বছর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। আমার মত অনেকেই দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করে আসছে। কিন্তু দল সঠিক মূল্যায়ন করলো না। এতে তৃণমূলে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।

দারিয়াপুর ইউনিয়নের মনোনয়নবঞ্চিত বর্তমান চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক,উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের আহবায়ক, নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী জাকির হোসেন কানন বলেন, তার দলের সাথে কোন সম্পৃক্ততা নেই। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এর পরিচয় দেন। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তো ছিলেনই না। এমন কি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কোন পদেও কোন দিন ছিলেন না। উনি প্রমান দিতে পারলে আমি আমার বিদ্রোহী প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেব।

দলীয় মনোনয়ন পাওয়া আব্দুস সবুর বলেন, আমি নৌকা পাওয়ার যোগ্য বলেই জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা দিয়েছেন। আমি ২০০৩ সালে দারিয়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। তবে কমিটির তালিকা না থাকলেও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দেওয়া প্রত্যয়ন আছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুমার কুন্ডু বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ যে তথ্য জেলায় পাঠিয়েছে আমরা সেই আলোকে কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। তার কোন পদ-পদবি ছিলো কি না উপজেলা আওয়ামী লীগ বলতে পারবে।

মাগুরা/ ২৭ নভেম্বর ২০২১