বিশেষ নিবন্ধ
সংঘাত হচ্ছে নিজেদের মধ্যেই। দলের প্রতি আনুগত্য রয়েছে সবার। তবে কেন দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীরা কাজ করছে ? মনোনয়ন দেওয়ার আগে যদি সকল সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে আলোচনা করে নেয়া যেত,তাহলে সংঘাতে পরিমাণ কম হতো। হয়তো কাউকে মনোনয়ন দেয়া হবে এবার। হয়তো কাউকে কোন পদ পদবী দেয়া হবে। অথবা এবার একজনকে প্রতীক দেয়া হলো,সামনের বার অন্যকাউকে প্রতীক দেয়া হবে। যোগ্যতা অনুযায়ী।এমন নিশ্চয়তা যদি নেতাকর্মীরা পেত তাহলে তৃণমূলের সংঘাতে পরিমাণ অনেক কম হতো।

তবে সব থেকে ভালো হতো একেবারে তৃণমূলের দলীয় নেতাকর্মীর ভোটে ইউপি চেয়ারম্যান মনোনয়ন যুদ্ধে নির্বাচিত হওয়া। নির্বাচন প্রার্থী হিসেবে দলীয় নেতাকর্মীদের ভোটে যারা মনোনয়নের জন্য নির্বাচিত হত, তাদেরকে প্রতীক দিলে তাহলে আর এই সংঘাত সৃষ্টি হতো না। ভবিষ্যতে এরকম পদ্ধতি করা যেতে পারে। তৃণমূলের ভোটে যারা জয়লাভ করবে তারাই দলীয় প্রতীক পাবে ।তবে সে ভোটের পদ্ধতি হতে হবে একেবারে স্বচ্ছ ও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য। আবার এমনও আশঙ্কা থাকে, যার টাকা বেশি সে দেখা যায় সমস্ত ভোটারের ভোট কিনে নেয়। ভোট কিনে যাতে নিতে না পারে সেদিকেও লক্ষ্য করতে হবে। কে যেন তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ভোট কিনে নিতে না পারে সে ব্যাপারে দলীয় কঠোর বিধান থাকবে।
অবশ্যই আমাদের উচিত দলের সিদ্ধান্ত মেনে দলের হয়ে কাজ করা।কিন্তু সেটা হচ্ছে না তার কারণ আমরা যে যেখানে আছি সবাই নিজের লোভে আর লাভে দলের হয়ে কাজ করছি।

সর্বোপরি আমি বলবো আমরা যদি বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ করি, তাহলে দলের সিদ্ধান্ত ও শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছে আমরা সকলেই তাঁর পক্ষেই কাজ করবো। তা না হলে আমাদের দলের প্রতি কিসের আনুগত্য রইল ?
রাজনীতি তো একদিনের নয় ? সময় ঠিকই ঘুরে ঘুরে আসে। আর আমি যদি দল করি শুধু চেয়ারম্যান, মেয়র এমপি হওয়ার জন্য তাহলে সে দল করা আর যাই হোক দেশ ও জনগনের জন্য হয় না।

মনোনয়ন বোর্ডের যারা ছিল তারা অনেক কিছুই বুঝে শুনে জেনে মনোনয়ন দিয়েছে। এবং সময়ে সময়ে দলের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত পরিবর্তনও হয়। তাই বলে আমরা দলের শৃঙ্খলা ভেঙে দলের বাইরে গিয়ে আমরা কাজ করতে পারিনা। আমি অনুরোধ করি আমাদের আওয়ামলীগের নেতা-কর্মী ভাই বন্ধুদের, আপনারা দলীয় প্রতীকের পক্ষে কাজ করুন।
যা আমাদের জন্য অনেক ভালো হবে।

একটি পরিবারের প্রধান এর সিদ্ধান্ত যেমন পরিবারের সকলে মেনে নিতে হয় ঠিক তদ্রূপ একটি দলের প্রধানের সিদ্ধান্ত দলের সকল নেতাকর্মীকে মেনে নিতে হয়। তা না হলে পরিবার ও দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ঘটে। আমাদের সকল ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরতে হবে।
হ্যাঁ হয়তো আপনারা সকলেই নিজেকে যোগ্য মনে করতে পারেন। দলের জন্য অনেক ত্যাগ শ্রম দিয়েছেন। কিন্তু আপনি দল থেকে সেরকম মূল্য পেলেন না। তাই বলে দলের বাইরে যাওয়া তো ভাল হলো না। কারণ আপনিতো দলকে ভালবাসেন। দলের জন্য হয়ে কাজ করেন। দলের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেন। এই দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বকারী দল। এই দল বঙ্গবন্ধু জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের দল।
এ দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা যাবে না। অবশ্যই দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপনাকে দলের জন্য কাজ করে যেতে হবে। দল অবশ্যই আপনাকে মূল্যায়ন করবে। এ বিশ্বাস রেখে আপনারা দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দলীয় প্রতীকের পক্ষে নির্বাচন করুন। যদি কাউকে ভালবাসেন সে ভালোবাসা যেন নিঃস্বার্থ হয়। সে ভালোবাসা যেন কোনো চাওয়া-পাওয়া না থাকে। তবে আপনি ভালো থাকবেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি অনুভুতির নাম। এই অনুভূতির বাইরে গিয়ে কাজ করা আপনার নিজের জন্য শুভ নয়। এ দলের বাইরে গিয়ে কাজ করলে আপনি দেখুন আপনার মনের মধ্যেও শান্তি পাবেন না।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সংখ্যায় কোটি-কোটি। এই দলকে চালাতে দলীয় প্রধানকে অনেক সময়, অনেক শ্রম দিতে হয়। দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে আপনারা দলের পক্ষে কাজ করুন নিবেদিতভাবে।
শ্রম কখনো বৃথা যায় না। দল অবশ্যই আপনাকে মূল্যায়ন করবে। শুধু একটু সময়ের ব্যাপার। শুধু একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু জয় হোক শেখ হাসিনার।

কাজী আনিসুর রহমান তৈমুর,সাবেক ছাত্রনেতা, বর্তমান সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ,কেন্দ্রীয় কমিটি।