বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজা মন্ডপে হামলা, ভাংচুর, হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও খুনের প্রতিবাদে এ বছর মাগুরায় শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলার কাত্যায়নি পূজা কমিটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে শহরের জামরুলতলা পূজা মন্ডপ কার্যালয়ে মাগুরা জেলা কাত্যায়নী পূজা উদযাপন কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মাগুরা জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। গৃহিত সিদ্ধান্তের সাথে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ একমত পোষন করেছেন বলে জানিয়েছেন কাত্যায়নী পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা।
মাগুরা জেলা কাত্যায়নী পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুন্ডু বিষটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। পঙ্কজ কুন্ডু বলেন,‘ বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন পূজা মন্ডপের কর্মকর্তাদের সাথে মতামতের ভিত্তিতে এবার মাগুরা জেলার কোথাও কাত্যায়নী পূজা না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ উপলক্ষে আমরা শুধুমাত্র ঘট পূজা করব’।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মাগুরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব কুন্ডু এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি যে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সে কারণে আমরা এবার ঐতিহ্যবাহি কাত্যায়নী পূজা জাঁকজমকে না করার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রসঙ্গত তিনি আরো বলেন, ‘সারাদেশের মধ্যে মাগুরায় সব থেকে জাঁকজমকপূর্ণভাবে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। দেশের বাইরে থেকেও অনেক দর্শনার্থী এ পূজা উপভোগ করতে আসেন। কিন্তু এবার দর্শনার্থীরা সেই পুজা দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন। এটি আমাদের কাছে অনেক কষ্টের তবু বাধ্য হয়েই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি’।শ্রীপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মনোরঞ্জন সরকার বলেন,‘যদিও এটা অত্যন্ত কষ্টের তারপরও দেশের বর্তমার অবস্থার কারণে জেলা কমিটি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার সাথে আমরা একমত পোষণ করছি’।

প্রসঙ্গত, বহু বছর ধরে মাগুরায় ঐতিহ্যবাহী এ কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এটি মাগুরার একটি অন্যতম ঐতিহ্য। দেশ-বিদেশের লাখ লাখ দর্শনার্থী এই পূজা উপভোগ করতে মাগুরাতে আসেন। দুর্গা পূজার ঠিক একমাস পরে ব্যাপক জাকজমকপুর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে প্রায় শত বছর ধরে জেলায় এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। পূজা উপলক্ষে গোটা মাগুরা শহর বর্ণীল আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়। মন্ডপগুলো সাজে দৃষ্টিনন্দন শৈল্পিক কারুকার্যে। এ উপলক্ষে মাস ব্যাপী মেলাটিও এ অঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ ও প্রাচীণ মেলা।

সভা থেকে রংপুরসহ দেশের বিভিন্নস্থানে যেসকল পরিবার আক্রান্ত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের তাছে জরুরী ভিত্তিতে সহায়তা পৌছে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

রূপক /মাগুরা / ১৯ অক্টোবর ২১