বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীরা এবার শেষ পর্যন্ত আর এপ্রিল মাসের বেতন ঈদের আগে বেতন তুলতে পারেননি। গতকাল বুধবার (১২ মে) ছিল ব্যাংক কার্যদিবসের শেষ দিন। এদিন প্রাথমিকের সরকারি শিক্ষকদের বেতন বিল ব্যাংকে আসার কথা ছিল।

উপজেলার এসব ১৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় এক হাজার শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছেন। বেতন বিলের আশায় বুধবার সারা দিনই তাঁরা ব্যাংকে প্রহর গুনেছেন। শেষ সময়ে বেতন না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভারে জটিলতা থাকায় সদ্য চালু হওয়া ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) পদ্ধতিতে বেতন পেতে জটিলতা তৈরি হয়েছে।

সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ও কৃষি ব্যাংকের মহম্মদপুর উপজেলা সদর শাখায় গত বুধবার ছিল শিক্ষকদের উপচে পড়া ভিড়। মুরাইল পশ্চিমখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম বলেন, ‘ এপ্রিলের বেতন ১ তারিখে পাওয়ার কথা। আজ বুধবার (১২ এপ্রিল) শিক্ষকদের বিলের চিঠি ব্যাংকে আসে নাই। শিক্ষকদের বিলও তৈরি করে এনেছি। চিঠি এলেই বিল জমা দেব। কিন্তু বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চিঠি আসেনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বেতনের জন্য সারা দিনই শিক্ষকেরা ফোনে খোঁজ নিয়েছেন।’

বাঁশো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান মোবাইলফোনে বলেন, ব্যাংকের শেষ দিন বিলের চিঠি আসার কথা ছিল। শিক্ষকেরা বোনাসের জন্য মহম্মদপুরের ব্যাংকেও সারা দিন ভিড় করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁরা খালি হাতে ফিরে গেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় ১৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় এক হাজার শিক্ষক ও কর্মচারী আছেন।

চরঝামা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) ব্যবস্থা চালু হয়। আগের তুলনায় দ্রুততম সময়ে বেতন বিল দেওয়ার জন্য এই পদ্ধতি চালু হলেও ১১ তারিখের আগে পাওয়া যাচ্ছেনা। শিক্ষকেরা ঈদের আগে বেতন পেলেন না। ঈদের আগে বেতন পেলে শিক্ষকদের ঈদটা ভালো হতো।’

সোনালী ব্যাংক লিমিটেড মহম্মদপুর শাখার ব্যবস্থাপক মতিন খসরু বলেন, ‘বেতনের জন্য শিক্ষকেরা সকাল থেকেই ব্যাংকে ভিড় করেন। আমি বেশ কয়েকবার ঝিনাইদহ হেড অফিসে খোঁজ নিয়েছি। বেতনের চিঠি এলে যত রাতই হোক শিক্ষকদের বোনাসের টাকা দিয়ে যেতাম।’

তবে মহম্মদপুর কৃষি ব্যাংক শাখার একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছেন, বুধবার বিকেলে সরকারি প্রাথমিকের শিক্ষক-কর্মচারীদের ঈদ বেতন বিল সংশ্লিষ্ট সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের মহম্মদপুর শাখায় জমা হয়। কিন্তু ঈদের আগে আর কোনো কর্মদিবস না থাকায় এসব শিক্ষক-কর্মচারীরা আর বেতন ভাতা তুলতে পারছেন না।

মাগুরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কুমারেশ চন্দ্র গাছী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, জেলার বাকি তিন উপজেলায় ঈদের আগেই বেতন পেলেও ইএফটি জটিলতায মহম্মদপুর উপজেলার শিক্ষক-কর্মচারীরা পাননি। ঈদের পর ব্যাংকের প্রথম কার্যদিবসে বেতন বিল তুলতে পারবেন বলে জানান।

শাহীন/রূপক/ মাগুরা/ ১৩ মে ২০২১