বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার রাধারনগর বাজারে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে বাড়ির জমি দখল করে জোরপূর্বক বাথরুম, গেয়ালঘর তৈরী করে এক প্রধান শিক্ষকের পরিবারকে বাড়িছাড়া করার উপক্রম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় রাধানগর উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুবাস কুন্ডু তার প্রতিবেশী নিহার কুন্ডু, নিশিত কুমার কুন্ডু, নিখিল কুন্ডুর বিরুদ্ধে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সাংবাদিকদের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান-রাধানগর বাজারের পাশে তাদের পৈত্রিক বাড়ি অবস্থিত। ওই বাজারের ব্যবসায়ী নিহার কুন্ডু, নিশীত কুন্ডু কয়েক বছর আগে তাদের বাড়ির পাশে জমি কিনে বাড়ি তৈরী করে। কিন্তু বাড়ি তৈরীর পর থেকেই তারা একটু একটু করে কৌশলে তার বাড়ির দক্ষিণ দিকে ৪শতক জমি দখল করে ২টি গোয়ালঘর, ২টি বাথরুম ও প্রশ্রাবখানা তৈরী করেছে। সেইসঙ্গে ওইসকল স্থাপনার ময়লা আবর্জনা, দুষিত ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি তাদের বাড়ির ড্রেনে প্রবাহিত করেন। এরফলে ওই শিক্ষক পরিবারটি প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধময় পরিবেশে অসহনীয় পরিবেশে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। এ বিষয়টি প্রতিবেশী পরিবারকে অবহিত করে তাদের জায়গা থেকে স্থাপনা তুলে নিতে বারবার অনুরোধ করলে তারা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুবাস চন্দ্র কুন্ডুসহ তার পরিবাকে হুমকি ধমকি ও নানা ভয়ভীতি প্রদর্শণ করছেন। Magura School Teacher in Problem pic 2
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে শিক্ষক সুবাস চন্দ্র কুন্ডু সাংবাদিকদের জানান- দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর শিক্ষকতা করে সুবাস চন্দ্র কুন্ড এখন অবসর জীবন যাপন করছেন। পাশের গ্রামে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জতির পরিবারটি তার বাড়ির পাশে জমি কিনে বসবাস করতে শুরু করে প্রায় ১০ বছর আগে। এরপর থেকে তারা বিভিন্ন সময়ে আমাদের বাড়িতে না থাকার সুুযোগ নিয়ে জোরপূর্বক বাড়ির দক্ষিণ দিকে ৪ শতক জমি দখল করে নেয়। জমিজমা মাপের পর তাদের গোয়ালঘর ও বাথরুম বেধে গেলে তারা সেগুলি না সরিয়ে উপরন্তু অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও অত্যাচার নির্যাতন শুরু করেছে। কিছু বলতে গেলেই অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি ধমকি দেয়। ওই গোয়াল ও বাথরুমের দুর্গন্ধ ও মশা মাছির অত্যাচারে অবস্থা এমন হয়েছে যে, তাকে মান সম্মান ও সুস্বাস্থ্য নিয়ে চলতে গেলে নিজ বাড়ি ছেড়েই চলে যেতে হবে। তিনি বলেন, একাধিকবার সরকারি আমিন এসে জমিজমা মাপ দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে গেলেও ওই পরিবারটি গায়ের জোরে আমাদের জায়গাতেই স্থাপনা রাখতে বদ্ধ পরিকর। আমার পরিবারের ৬ ভাইয়ের মধ্যে বেশীরভাগ সদস্যই চাকরি বা ব্যবসার প্রয়োজনে বাড়িতে থাকনে না। ফলে আমাকে একা ও অসহায় পেয়ে নিয়মিত নির্যাতন করছে প্রতিবেশী পরিবারটি। এতে আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্থ ও অসুস্থ হয়ে পড়েছি। যে কোন সময় বড় ধরনের অসুস্থ হয়ে পড়তে পারি। তিনি তার জীবন বাঁচাতে ও এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সকলের সহায়তা আশা করেন।
ওই বাড়ির গৃহবধূ শিউলি রানী কুন্ডু অভিযোগ করেন, প্রতিবেশীর বাথরুম ও গোয়ালঘরের দুর্গন্ধে প্রতি মুহুর্তে অস্বাস্থকর পরিবেশে থাকতে হচ্ছে তাদের। ঘরের জানালা খোলা তো দুরের কথা জানালা বন্ধ রেখেও ঘরে বসবাস করা যাচ্ছে না। ময়লা আবর্জনায় প্রচুর মশা সৃষ্টি হচ্ছে।
অভিযুক্ত রাধানগর বাজারের ব্যবসায়ী নিশিত কুন্ডু দাবী করেন- জমিটি সুকুমার কুন্ডুদের হলেও আমরা দীর্ঘদিন এটি ভোগদখল করে আসছি। আমাদের ভোগদখলকৃত অংশটি আমাদের নামে লিখে দেয়ার কথা থাকলেও তারা সেটি লিখে দিচ্ছেন না। এ বিষয়ে তাদের তেমন কিছু বলার থাকলে তারা আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে কাদিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী জানান- আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা দুপক্ষকেই নোটিশ করেছি। তারা গ্রাম আদালতে হাজির হলে কাগজপত্রের ভিত্তিতে আপোষ মিমাংশার চেষ্টা করা হবে।

রূপক/ মাগুরা / ৩১মার্চ ২০২১