বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরা সদরের পূর্ব বাড়িয়ালা গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এনামুল হক মিয়া নামে আঠারখাদা ইউনিয়ন পরিষদের এক মেম্বরের বিরুদ্ধে ৩৫ শতক জমির ধরন্ত ধানগাছ কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রভাবশালী ওই ইউপি সদস্যের হুমকি ধমকিতে প্রাণসংশয়ে রয়েছে বলে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন ভ‚ক্তভোগী কৃষক সাথিল আরব জোয়ারদার (৩২)নামে ওই কৃষক। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে জনপ্রতিনিধির দ্বারা ধানক্ষেত নষ্ট করায় ক্ষোভ জানিয়েছে এলাকাবাসি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় নিজ জমিতে কেটে ফেলা ধরন্ত ধানগাছ দেখিয়ে কান্না করছে কৃষক সাথিল। তিনি জানান- পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত তার ১ একর ২০ শতক জমি আছে। এ জমির আয় থেকেই তার সংসার চলে। গত বছর তার বাবা হাসিবুর জোয়ারদার এর মৃত্যুর পর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বর একই গ্রামের এনামুল হক জাল কাগজপত্র দেখিয়ে হঠাৎকরে তাদের জমির মালিকানা দাবী করে। এরই অংশ হিসেবে একাধিকবার গ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শালিস নিস্পত্তির চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে একাধিক মামলায় আদালতে ওই ইউপি সদস্য হেরে যান। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হওয়ায় ও গ্রাম্য গোষ্টিতে বড় থাকার কারণে কোন আইন ও শালিস না মেনে গায়ের জোরে তার জমি দখল করার চেষ্টা করে। এর আগে কয়েকবার তিনি সাথিলের জমি থেকে জোরপূর্বক পাট ও অন্যান্য ফসল কেটে নিয়ে গেছেন। বিভিন্ন সময়ে সাথিলকে মারপিট ও হত্যার হুমকি দেয় এনামুল ও তার লোকজন। শনিবার রাতে পূর্ব বাড়িয়ালা মাঠে তারা সাথিলের ৩৫শতক জমির ধরন্ত ধানগাছের মাঝ থেকে কাচি চালিয়ে কেটে নষ্ট করে ফেলে রেখে যায়। ধানগাছগুলিতে সবে দুধসর এসেছে বলে জানায় কৃষক সাথিল। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবী করে মাগুরা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ এলাকার কামাল শেখ, পল্টু জোয়ারদার, গোলাপ শাহ, আন্নি বেগমসহ একাধিক কৃষক জানান- কৃষকের কাছে তার ধান অনেকটা সন্তানের মত। রাতের আধারে ধরন্ত ধানগাছের এ ধরনের ক্ষতি যারা করেছে তাদের বিচার হওয়া উচিত। জমি নিয়ে বিরোধ থাকলে তারা সে বিরোধ আইনের মাধ্যমে মিটাতে পারতেন। কিন্তু গায়ের জোরে রাতের আধারে এ ধরনের ধান কাটা কোনক্রমেই মেনে নেয়া যায় না।
স্থানীয় গ্রাম্য মাতব্বর মোঃ মোতালেব জানান- বেশকিছুদিন ধরে জমিজমা নিয়ে এ বিরোধ চলায় আমরা গ্রামবাসির পক্ষ থেকে উভয়পক্ষকে নিয়ে মিমাংসার চেষ্টা করি। কিন্তু মেম্বর গ্রামে মিটিং এ মিমাংসার প্রস্তাব দিয়ে ধানকাটার মত এ ধরনের কাজ করায় আমরা হতাশ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য এনামুল হক মিয়াকে বারবার ফোন করার পরও তিনি ফোন ধরেননি। মাগুরা সদর থানার ওসি জয়নাল আবেদিন বলেন, বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।