বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ বলেছেন, ‘অনেকে ঘরে বসে বসে টেলিভিশনে উঁকি দিয়ে দিয়ে সমালোচনা করেন। আমরা দেখি ঘরে বসে ওনার উঁকি দিয়ে দিয়ে বলছেন। ঘর থেকে বের হন না। এই করোনাকালে একদিনও বসে ছিলাম না। প্রতিদিন আমি কাজ করেছি। অনেকে কাজ করেছেন। আমরা জানি করোনায় আক্রান্ত হয়ে যে কোন সময় মৃত্যু হতে পারে। তাই বলে হাত গুটিয়ে বসে থাকার শিক্ষা আমাদের নেত্রী আমাদের দেননি। নেত্রীও বসে নেই। তিনি কাজ করছেন। সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি কাজ করছেন। আক্রান্ত হচ্ছেণ অনেকে। অনেকে ইতিমধ্যে মারা গেছেন। আর ওনারা, বিএনপির নেতারা টেলিভিশনে উঁকি দিয়ে দিয়ে কথা বলছেন। জনগণের পাশে নেই।’
আজ বুধবার দুপুরে যশোর সার্কিট হাউস মিলনায়তনে করোনাকালীন পরিস্থিতিতে খুলনা বিভাগের সাংবাদিকদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সফল ভাবে নেতৃত্ব দেয়ার কারনে বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার বিশ্বের সর্বনিম্ম যে কয়টি দেশ তার মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে। করোনা বাংলাদেশে ৫ মাস এসেছে তবে একটি মানুষও না খেয়ে মৃত্যুবরণ করেনি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারনে। কারো মধ্যে খাদ্যের জন্য কোন হাহাকার নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে সাংবাদিক ভাই বোনরা সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছেন। পুলিশ বাহিনী উদাহরণ তৈরী করেছে। সেনা সদস্যরা মানুষের পাঁশে দাঁড়িয়েছেন। ডাক্তার নার্সরাও তো আছেনই। এভাবে যারাই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। এই পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যে ভাবে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের করোনাকালীন সহায়তা দেয়া হচ্ছে আশে পাশের কোন দেশেই তা দেয়া হচ্ছেনা। ভারতেও দেয়া হচ্ছেনা। নেপালে দেয়া হচ্ছেনা , পাকিস্থানেও দেয়া হচ্ছেনা। এই সহায়তা আরও সাংবাদিকদের পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে। আপনারা জানেন সাংবাদিকদের আরো একটি গ্রæপ আছে। তারা সরকারের বিরুদ্ধে লেখে সরকারের বিরুদ্ধেই বলে। কিন্তু সরকার সবার জন্য যিনি সরকারকে সমালোচনা করেন সরকার যেমন তার জন্য। সরকার সবার জন্য। সবার জন্য এই রাষ্ট্র । সেটা মাথায় রেখেই তাদেরকে বলছি তারা যেন যোগাযোগ করেন। সরকারের পক্ষ থেকে যে সহায়তা করা হবে সেটি সবার জন্য করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মনে করেন সমালোচনা কাজ করার ক্ষেত্রে সহায়ক। অন্ধ সমালোচনা বা একপেশে সমালোচনা সহায়ক নয়। সমালোচনা ভুল ত্রুটি সংশোধন করার ক্ষেত্রে সহায়ক। তাই যারা সমালোচনা করেন তাদের আমি বিনীত ভাবে অনুরোধ জানাই আপনার অবশ্যই সমালোচনা করবেন কিন্তু অন্ধ এবং বধিরের মতো সমালোচনা করবেন না। সমালোচনা করুন। আমরা সমালোচনা সহ্য করার সংস্কৃতি লালন করি। প্রধানমন্ত্রী লালন করেন। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সেটা লালন করে।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের আয়োজনে ও যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সহযোগিতায় চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যশোর -৬ আসনের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার, বিএফইউজে’র সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহমুদ, যশোর জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, প্রেসক্লাব যশোর সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মুন্সি মোহম্মদ মাহবুব আলম, বিএফইউজের সহ সভাপতি মনোতোষ বসু, যুগ্ম মহাসচিব সাকিরুল কবীর রিটন, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিলন রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদ রহমান। অনুষ্ঠানে প্রথম ধাপে যশোরের ৪৮ জন, মাগুরার ২৭ জনসহ খুলনা বিভাগের নয় জেলার ৩৩৮ সাংবাদিকদের মধ্যে প্রতিজন দশ হাজার টাকা করে এ চেক বিতরণ করা হয়। মাগুরার সাংবাদিকদের পক্ষে চেক গ্রহন করেন মাগুরা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক শামীম খান।
অনুষ্ঠানে বিএফইউজে’র সভাপতি মোল্লা জালাল বলেন,‘একটি চক্র সাংবাদিকতার নামে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করার পাশপাশি বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। আন্ডার ওয়াল্ড পত্রিকা ও অন লাইনের জনা কয়েক সাংবাদিক নিয়ে সাংবাদিক সংগঠন করছে। সব বিষয় আমরা অবগত আছি। সাংবাদিক কল্যান ট্রাস্টের মাধ্যমে কয়েকটি ধাপে পেশাদার সব সাংবাদিককেই আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে অপসাংবাদিকতাকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। সেক্ষেত্রে মুল ধারার সাংবাদিকদের কঠোর অবস্থানে যেতে হবে’।
এ দিকে এ বিষয়ে মাগুরা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক শামীম খান বলেন,‘ ২৭ সাংবাদিকের চেক আজ মাননীয় তথ্যমন্ত্রী সরাসরি হস্তান্তর করেছেন। ঈদের ছুটির কারণে কিছু চেক এখনো অসম্পন্ন রয়েছে। যা ঈদের পরপরই ডাকযোগে পাওয়া যাবে। এছাড়া যারা এখনো আবেদন করেননি তাদের প্রেসক্লাবের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তারা খুব দ্রæত এ সহায়তা পাবেন। মোট কথা জেলায় কর্মরত পেশাদার সব সাংবাদিকই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর করোনা সহায়তা ও সাংবাদিক কল্যান তহবিলের অন্যান্য অনুদান পর্যায়ক্রমে পাবেন। গত ৪ বছরে মাগুরা জেলা ও উপজেলার ২১ জন সাংবাদিক ঢাকা সাংবাদিক কল্যান ট্রাস্ট থেকে শারীরীক অসুস্থ্যতা ও আর্থিক অসচ্ছলতা জনিত কারণে মাথাপিছু ১ লাখ ও ৫০ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছেন। মৃত্যজনিত কারণে ৪ সাংবাদিক ৫ লাখ টাকা অনুদান পেয়েছেন। বুধবার পাওয়া চেক দ্রুত সাংবাদিকদের কাছে হস্তান্তর করা হবে’।
রূপক/মাগুরা/ ২৯ জুলাই ২০২০