বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরায় পিসিআর ল্যাব স্থাপন, হাসপাতালে হাই ফ্লো অক্সিজেন সাপ্লাই এবং আইসিইউ ব্যবস্থা নিশ্চিত করণের দাবিতে মানববন্ধন, সমাবেশ, পদযাত্রা এবং সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে স্মারক লিপি দিয়েছে করোনা দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রতিরোধে গণকমিটি।  সকাল ১১ টায় মাগুরা প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অংশ নেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি এবং বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের নেতা-কর্মীরা। এ সময় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মাগুরা জেলা গণ কমিটির আহ্বায়ক এটিএম মহব্বত আলি, যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী ফিরোজ, সদস্য সচিব এটিএম আনিসুর রহমান এবং যুগ্ম সদস্য সচিব সম্পা বসু। পরে তারা পদযাত্রা নিয়ে মাগুরা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে স্মারক লিপি পেশ করেন। সিভিল সার্জন বরাবরে দেয়া  স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন-

মাগুরা জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে । ২৫ জুলাই ২০২০ পর্যন্ত মোট করোনা পজিটিভ ৩৭৮ জন। প্রতিদিনই নতুন করে ২০ জন, ২২জন শনাক্ত হচ্ছেন । এ পর্যন্ত ৮ জন করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন । যার মধ্যে ৪ জনের ক্ষেত্রে মৃত্যুর পর রিপোর্ট এসেছে তারা করোনা পজিটিভ ছিলেন । সঠিক সময়ে টেস্ট রিপোর্ট ও চিকিৎসা পেলে তারা হয়তো বেঁচে যেতেন। করোনা দুর্যোগের শুরুতেই মাগুরা জেলা গণকমিটির পক্ষ থেকে মাগুরা জেলায় করোনা টেস্ট ল্যাব, জেলা হাসপাতালে আইসিইউ ও ভেন্টিলেটরের দাবি জানান হয়েছিল । এই ৪ মাসে সেটা বাস্তবায়ন করাও কঠিন ছিল না । আমাদের জেলায় এখনও করোনা টেস্ট ল্যাব নেই। যশোরে নমুনা পাঠানো হয় । মাঝে মাঝে চার/পাঁচ দিন কোন রিপোর্টই আসে না । নমুনা দিলে ৬ থেকে ৭ দিন লেগে যাচ্ছে ফলাফল জানতে । যারা পজিটিভ শনাক্ত হচ্ছেন ৭ দিন পর, তারা ৭ দিন ধরে নিজের অজান্তেই রোগ ছড়াচ্ছেন । অদ্যাবধি মোট সন্দেহজনক নমুনা পাঠানো হয়েছে ২৫৮৬ টি ও প্রাপ্ত মোট রিপোর্ট সংখ্যা ২৩৬১ টি। অর্থাৎ ২২৫ নমুনার রিপোর্ট এখনও পেন্ডিং। এই রিপোর্টগুলো আলোর মুখ দেখবে কিনা আমরা জানি না । এই জেলায় একটি পিসিআর ল্যাব থাকলে এই অবস্থা হতো না । ২৫০ বেডের মাগুরা জেলা হাসপাতালে আইসিইউ নেই, হাই ফ্লো অক্সিজেন সাপ্লাই ব্যবস্থা নেই। ফলে করোনা রোগী চিকিৎসার প্রাতিষ্ঠানিক কোন আয়োজনই নেই। এজন্য শনাক্ত বিবেচনায় আমাদের জেলার করোনা রোগীর মৃত্যু হার অনেক বেশি (২.৪%)। এখন মাগুরা জেলায় হোম আইসোলেশনে আছেন ১২৫ জন। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪ জন এবং ফরিদপুর বা ঢাকায় রেফার করা হয়েছে ১০ জনকে । হাসপাতালে ভর্তির তুলনায় রেফার করা রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি । এ থেকেই বোঝা যায় মাগুরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার বেহাল দশা । এরকম পরিস্থিতিতে করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় গণ কমিটির পক্ষ থেকে নিম্নলিখিত দাবি জানাচ্ছি— ১| করোনা টেস্ট ল্যাব (পিসিআর ল্যাব) নির্মাণ করতে হবে । টেস্ট রিপোর্ট দ্রুত দিতে হবে । ২| হাসপাতালে হাই ফ্লো অক্সিজেন সাপ্লাই, আইসিইউ ও ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করে করোনা রোগীর চিকিৎসার উপযোগী আয়োজন নিশ্চিত করতে হবে । অতএব, এ সকল দাবিতে আমরা আপনার কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করছি।

 

রূপক/মাগুরা/ ২৮ জুলাই ২০২০