বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
করোনায় আক্রান্তের হিসেবে মাগুরায় এখন চূড়ান্ত সংক্রামন চলছে। জেলায় সংক্রামনের দিক দিয়ে ৪০% রোগী পজেটিভ রোগী পাওয়া যাচ্ছে। যা এ সময়ে সর্বাধিক। আজ বুধবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব থেকে প্রাপ্ত রিপোর্টে মাগুরা জেলায় ৫৮ জন সন্দেহভাজনের করোনা টেস্ট করে ২৩ জনকে পজেটিভ পাওয়া গেছে। যা সংক্রামনের দিক দিয়ে জেলায় সর্বোচ্চ। গতকাল মঙ্গলবারও একইভাবে ৫৫ জন সন্দেহভাজনের মধ্যে ২২জন পজেটিভ সনাক্ত হন। আজ পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত ২৫৬জন।  চূড়ান্ত এ সংক্রামনের সময়ে জেলায় করোনা রোগীদের জন্য চিকিৎসা সহযোগিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।

মাগুরায় করোনা প্রতিরোধে গণকমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব ও বাসদ কেন্দ্রীয় নেত্রী শম্পা বসু অভিযোগ করেন-  মাগুরা সরকারি ২৫০ শয্যা হাসপাতাল অন্যান্য হাসপাতালগুলিতেও করোনা চিকিৎসার প্রাতিষ্ঠানিক কোন আয়োজন নেই। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে মাগুরায় করোনা প্রতিরোধে গণ কমিটি গঠনের পর থেকেই আমাদের দাবী ছিল মাগুরায় পিসিআর ল্যাব স্থাপন করতে হবে। টেস্ট রিপোর্ট আসতে আমাদের যেন দেরী না হয় সেজন্য আমরা বারবার প্রশাসনের কাছে এ দাবী জানিয়ে আসছিলাম।   এইসঙ্গে করোনা রোগীর সংকটময় পরিস্থিতিতে আইসিইউ, সেন্টাল অক্সিজেন স্থাপনের দাবী তারা জানিয়ে আসছেন। এ অবস্থা জেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশা ফুটে উঠছে বলে জানান তিনি। তিনি জানান- মাগুরায় ইতিমধ্যে যে ৭জন রোগী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তার মধ্যে ৪ জনই রিপোর্ট পেয়েছেন মৃত্যুর পরে। যেটি খুবেই ভয়াবহতার ইঙ্গিত দেয়। যে কোন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা রোগী রেফার করে দিচ্ছেন ফরিদপুর কিংবা ঢাকায়। যেতে যেতেই অনেকে মারা যাচ্ছেন। এটা একটি জেলার স্বাস্থ্য সেবা হতে পারেনা। এই মুহুর্তে স্বাস্থখাতের দুর্বলতা গুলি চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার দাবী জানান তিনি।
এদিকে ইতিপূর্বে সিভিল সার্জন অফিসের ফেসবুক পেজে সকালের দিকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একটি পোস্ট দেয়া হতো। কিন্তু ইদানিং দুপুর গড়িয়ে ওই পোষ্ট দেয়া হয়।  সেখানেও অসম্পূর্ণ তথ্য থাকায় অনেকেই বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

মাগুরা সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. বিকাশ শিকদার জানান- মাগুরা ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতাল প্রশাসনেক অনুমোদন থাকলেও জনবল কিংবা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা না থাকায় এটি এখনও ১শ শয্যারই সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। হাসপাতালের ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলাকে কোভিড রোগীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। বর্তমানে নার্সিং ইন্সটিটিউটের একটি বিল্ডিংয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মাগুরা সদর হাসপাতালে কোন সেন্ট্রাল অক্সিজেনের সরবরাহ নেই।  হাসপাতালে কোন আইসিইউ নেই। তবে আক্রান্ত রোগীদের বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নেয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তিনি জানান- মাগুরা সদর হাসপাতালে দুইটি লিফটের জন্য গণপূর্ত বিভাগের পক্ষ থেকে একজন খন্ডকালীন লিফটম্যান দেয়া হয়েছে। তিনি স্বল্প সময় লিফট চালু রাখেন। এদিকে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক ও নার্স করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।

মাগুরা/ ১৫ জুলাই ২০২০