বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর রাত পর্যন্ত ঘুর্ণিঝড় আম্ফানে চলা স্মরণকালের দীর্ঘসময়ের টানা ঝড়ের সাথে ভারি বর্ষণে মাগুরায় ঘর-বাড়ি, গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে মাঠে থাকা লিচু, আম, পেপে, কলা, ধান, শবজি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম ও জেলা পরিষদ চেয়াম্যান পংকজ কুন্ডু’র দাবী স্মরণকালে দীর্ঘস্থায়ী এ ঝড়ে সব মিলিয়ে জেলায় ক্ষতির পরিমান কমপক্ষে শত কোটি টাকা।
মাগুরা সদররের হাজরাপুর কৃষক উন্নয়ন সমিতির সদস্য কাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সদর উপজেলার হাজীপুর, হাজরাপুর, রাঘবদাইড় ইউনিয়ন, আঠারখাদা, মঘি ও পৌর সভার কিছু এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে ২০ হাজারের উপরে লিচু, আম, কাঠাল, কলা, পেপে বাগান রয়েছে। যার মধ্যে জেলার প্রধান অর্থকারি ফসল লিচু বাগান রয়েছে প্রায় ৭ হাজর। কিন্তু বুধবার সারা রাতের ঝড়ের তান্ডবে গোটা এলাকার সব ফসল নষ্ঠ হয়ে গেছে। প্রতি বছর এ এলাকা থেকে ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকার আম ও লিচু বিক্রি হয়ে থাকে’। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা তাদের ফসল হানীর কারনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কারন এসকল ফসল বিক্রির টাকায় সারা বছর তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক জাহিদুল আমিন বলেন, বর্তমানে জেলায়-৬০০ হেক্টর জমিতে লিচু, ১৩০০ হেক্টরে আম, ৭০০হেক্টরে কলা, ৬০০ হেক্টর জমিতে পেঁপে, ৬২০ হেক্টরে কাঠার, ২০০ হেক্টর জমিতে নালিম,৭২০ হেক্টর মুগডাল, ২৭২০ হেক্টরে বিভিন্ন সবজি, ২৮২০ হেক্টরে তিল এবং ৩৫ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। তবে এসকল ফসলের মধ্যে প্রায় শত ভাগ পেঁপে, কলা ও অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। আর্থিক ক্ষতির পরিমান নিরুপনে তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন বলে জানান, জাহিদুল আমিন।
জেলা প্রশাসক ড. আশাফুল আলম ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পংকজ কুন্ডু বলেন, ‘স্মরণকালে দীর্ঘস্থায়ী এ ঝড়ে শত-শত কাচা, আধাপাকা বাড়িঘর, গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে। বিশেষ করে জেলার প্রধান অর্থকরি ফসল হাজারপুরী লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এছাড়া পেপে কলা, আম, সবজীসহ মাঠে থাকা ফসলের অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপনের কাজ চলছে। তবে তারা দুই জনই জানান, জেলায় ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান কমপক্ষে শত কোটি টাকা।