তাছিন জামান,মাগুরাবার্তা 
১৪ ডিসেম্বর। শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস। দিনটি পালনে সরকারি বেসরকারি নানা আয়োজন থাকলেও মাগুরার শহীদ বুদ্ধিজীবিদের খবর কেউ কি রাখেন? মাগুরার কৃতি সন্তান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রখ্যাত অধ্যাপক শহীদ এএনএম মুনিরুজ্জামানসহ তার পরিবারের ৪শহীদের প্রতি সম্মান দেখানোর দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

দেশমাতৃকার জন্য জীবন দানকারি একজন বুদ্ধিজীবি এএনএম মুনিরুজ্জামান।  মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার তারাউজিয়াল গ্রামের সন্তান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান শহীদ বুদ্ধিজীবী আবু নাসেম মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামানসহ তার পরিবারের ৪ জনকে গুলি করে হত্যা করে পাক বাহিনী। কিন্তু মাগুরার নতুন প্রজন্মের অধিকাংশই তাদের বলতে গেলে চেনেনই না। এমনকি তার নিজ গ্রামের অনেকেই জানেন না মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখান বিভাগের এই শিক্ষককে।  জনাব মুনিরুজ্জামান ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ শিক্ষক। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চের রাতে পবিত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বাসভবনে  কোরআন শরীফ তেলাওয়াত অবস্থায় পাক হানাদার বাহিনী তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর বাংলা পাঠ্য বইয়ে একটি প্রবন্ধে তাকে সহ অন্যান্য শহীদ বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে একটি লেখা রয়েছে। কিন্তু মাগুরায় জনাব মুনিরুজ্জামান এর নাম উচ্চারিত হয়না কখনও।

তাঁর  ভাই এর ছেলে তারাউজিয়াল গ্রামে পল্লী চিকিৎসক শাহিদুজ্জামান খসরু জানান, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তার অবস্থান থাকায় ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ অপারেশন সার্চ লাইট শুরু হলে পাকিস্থানি বাহিনীর নারকিয় হামলায় প্রাণ হারান তিনি। একই সময় তার ছোট ভাই এ্যাড. নবাব মিয়া, ছেলে আকরামুজ্জামান ও ভাগ্নে মঞ্জুর হোসেনকে নির্মম ভাবে হত্যা করে এবং বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মধ্য মাটি চাপা দেয়।

এই শহীদ শিক্ষককে নিয়ে সরকারি কিংবা বেসরকারি  কোন আয়োজন চোখে পড়ে না। শহীদ পরিবার হিসেবেও পরিবারের কাউকে কখনো আহবানও করা হয়না।

শ্রীপুর-মাগুরার  নতুন প্রজন্মের  যারা অবগত হয়েছেন  তারা শহীদ বুদ্ধিজীবি মুনিরুজ্জামান এর স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন। তার নামে মাগুরা-শ্রীপুর সড়কটির নামকরণের দাবী জানিয়েছেন।

রূপক/মাগুরা/১৩ ডিসেম্বর ১৯