বিশেষ প্রতিনিধি,মাগুরাবার্তা
মাগুরার বহুল আলোচিত মায়ের পেটে গুলিবিদ্ধ শিশু সুরাইয়ার ৪র্থ জন্মদিনে আজ মঙ্গলবার বিভিন্ন মিডিয়ায় ‘মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ সুরাইয়া ৪ বছরেও হাটতে শেখেনি’ এ জাতীয় শিরোনামে সংবাদটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নজরে এসছে। মঙ্গলবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মাগুরার জেলা প্রশাসক আলি আকবরকে বিষয়টি জানালে সন্ধ্যায় তিনি ও জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে কেক, মিষ্টি, নতুন কাপড় ও খেলনা নিয়ে সুরাইয়ার বাড়িতে যান। সেখানে তারা কেক কেটে সুরাইয়ার জন্মদিন পালন করেন। পরে জেলা প্রশাসক সুরাইয়ার উন্নত চিকিৎসার আশ্বাস দেন।
জেলা প্রশাসক আলী আকবর জানান- মিডিয়ায় সুরাইয়ার অসুস্থ্যতার খবর ছাপা হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাদেরকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। আমি এসে সুরাইয়ার বাড়িতে তার জন্মদিন পালন করলাম। মুলত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তার ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। সে যেন উন্নত চিকিৎসা পেতে পারে তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি আবেদন সুরাইয়ার বাবাকে করতে বলেছি। আশাকরছি তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা হবে।
২০১৫ সালের ২৩ জুলাই মায়ের পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত অবস্থায় মাগুরা সদর হাসপাতালে অস্ত্রপচারের মাধ্যমে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জন্ম হয় সুরাইয়ার। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। মঙ্গলবার বয়স ৪ থেকে পাঁচে পড়লেও সুরাইয়া। কিন্তু সে এখনও হাটতে শেখেনি। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনা। হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হয় তাকে। বাম চোখটা অন্ধ হয়ে গেছে আগেই। ডান চোখেও কম দেখতে পায় সে। টাকার অভাবে তার উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছে না পরিবার। এ খবরটি গতকাল মঙ্গলবার সংবাদে প্রকাশ পাওয়ার পর আজ জেলা প্রশাসক তাদের বাড়েতে আসলেন।
সুরাইয়ার মা নাজমা বেগম জানান- মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে আমার মেয়ের খোঁজ নেয়া হয়েছে। এটি আমার কাছে অনেক গর্বের। এখন আমার মেয়ের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা হলে আমরা খুব খুশি হব। আমরা প্রধানমন্ত্রীর জন্য অনেক দোয়া করি।
২০১৫ সালে ২৩ জুলাই বিকাল ৪টার দিকে মাগুরা শহরের দোয়ারপাড় এলাকায় স্থানীয় দুপক্ষের সংঘর্ষে মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ হয় সুরাইয়া। ওইদিন রাতেই জরুরী অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাকে মায়ের গর্ভ থেকে বের করেন ডাঃ শফিউর রহমান। এ সময় আবদুল মমিন নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ভাগ্যচক্রে বেঁচে যায় গর্ভের ভেতরে গুলিবিদ্ধ শিশু সুরাইয়া ও তার মা নাজমা বেগম। এ ঘটনা নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় তৎকালীন সময়ে প্রচুর খবর প্রচার হয় এবং সরকারের উর্ধ্বতন মহল থেকে সুরাইয়ার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।
রূপক/মাগুরা /২৩ জুলাই ১৯